ফাহিম সালেহ
ফাহিম সালেহ

নিউইয়র্কে বাংলাদেশি খুন

চুরির ঘটনা লুকাতে ও বান্ধবীর সঙ্গে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হত্যা করা হয় ফাহিমকে

নিউইয়র্কের নিজ অ্যাপার্টমেন্টে ২০২০ সালের ১৩ জুলাই খুন হয়েছিলেন ফাহিম সালেহ। ওই ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস হ্যাসপিলের আইনজীবীরা বলেছেন, সালেহর হাজার হাজার ডলার তছরুপ করার পর সেই ঘটনা লুকাতেই তিনি ওই হত্যাকাণ্ড ঘটান।

ফাহিমকে খুন করার মাত্র কয়েক দিন পর নতুন বান্ধবীকে উপহার দিতে চুরি করা অর্থ ব্যবহার করেন হ্যাসপিল।

বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ফাহিম সালেহ রাইড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতের উদ্যোক্তা ছিলেন।

ফাহিম হত্যাকাণ্ডে দায়ের হওয়া মামলায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটানের একটি আদালতে ২০২০ সালের ১৩ অক্টোবর হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে।

ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখতেন হ্যাসপিল। তদন্তসংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ফাহিমের মোটা অঙ্কের অর্থ (৪ লাখ ডলার) সরিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ফাহিম ওই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু হ্যাসপিল এরপরও অর্থ চুরি করছিলেন ও আইনগত পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার হুমকি পান।

গ্রেপ্তার হওয়া টাইরেস ডেঁভো হ্যাসপিল

সরকারি কৌঁসুলিদের ধারণা, ফাহিমকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনামাফিক খুন করেন হ্যাসপিল। এর আগে টেজার ব্যবহার করে ফাহিমকে অজ্ঞান করা হয়। টেজারের সূত্র ধরে হ্যাসপিলকে শনাক্ত করার কথা জানায় পুলিশ। হত্যার পর ফাহিমের শরীর খণ্ডবিখণ্ড করার কাজে ব্যবহৃত ইলেকট্রিক করাতসহ পরিচ্ছন্নতাসামগ্রী কেনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়।

ফাহিমের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয়গুলো দেখতেন হ্যাসপিল। ফাহিমের মোটা অঙ্কের অর্থ সরিয়ে ফেলেছিলেন তিনি। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ফাহিম তাঁকে অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু হ্যাসপিল এরপরও অর্থ চুরি করছিলেন ও আইনগত পদক্ষেপের সম্মুখীন হওয়ার হুমকি পান।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানায়, হ্যাসপিলের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত খুন ছাড়াও অর্থসম্পদ লুট, চুরি, লাশ গুমের চেষ্টা ও আলামত নষ্টের অভিযোগ আনা হয়েছে।

ওই হত্যাকাণ্ডের পেছনে হ্যাসপিলের মানসিক কষ্ট ও যন্ত্রণাকাতর ছোটবেলার কথা তুলে ধরেন কৌঁসুলিরা। তবে তাঁরা বলেন, ফাহিমকে খুন করার মাত্র কয়েক দিন পর নতুন বান্ধবীকে উপহার দিতে চুরি করা অর্থ ব্যবহার করেন হ্যাসপিল।

দোষী সাব্যস্ত হলে হ্যাসপিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মুখে পড়তে পারেন। অবশ্য তাঁর কৌঁসুলিদের আশা, কথিত মানসিক অবস্থা বিবেচনায় সাজা লঘু হতে পারে হ্যাসপিলের।