তিমিটির নাম ললিতা। বয়স ৫৭ বছর। এর মধ্যে ৫০ বছর বেশি সময় কেটেছে বন্দী অবস্থায়। কথা ছিল, তিমিটিকে সাগরে মুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে মুক্তির স্বাদ আর পায়নি। এর আগেই গতকাল শুক্রবার বিকেলে মারা গেছে ললিতা।
ললিতা ছিল অর্কা প্রজাতির নারী তিমি। সেটি রাখা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের মায়ামি শহরের বিশাল একটি অ্যাকুয়ারিয়ামে। ‘মায়ামি সিকুয়ারিয়াম’ নামে পরিচিত সেটি। সিকুয়ারিয়ামের দর্শনার্থীদের কাছে সবচেয়ে বড় আকর্ষণ ছিল ললিতা। নানা খেলা দেখিয়ে তাঁদের মনোরঞ্জন করত সেটি।
ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট দিয়ে ললিতার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে মায়ামি সিকুয়ারিয়াম কর্তৃপক্ষ। তাতে বলা হয়েছে, কয়েক দিন ধরে তিমিটির শরীরে গুরুতর অসুস্থতার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল। এরপর দ্রুত সেটিকে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তবে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, কিডনির জটিলতার কারণে তিমিটির মৃত্যু হয়েছে।
প্রশান্ত মহাসাগরের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ১৯৭০ সালে ললিতাকে ধরা হয়েছিল। তখন থেকে অনেক বছর ধরে এটি ছিল মানুষের মনোরঞ্জনের একটা উৎস। পরে ২০২২ সালে এটিকে অবসরে পাঠায় মায়ামি সিকুয়ারিয়াম। গত মার্চে তিমিটিকে সাগরে মুক্ত করে দেওয়া ঘোষণা দেয় তারা। ধারণা করা হয়, ললিতার ৯৭ বছর বয়সী মা তিমি এখনো সাগরে বেঁচে আছে।
২০১৩ সালে অর্কা তিমি নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রকাশিত হয়। ‘ব্ল্যাক ফিশ’ নামের ওই তথ্যচিত্রে এ প্রজাতির তিমির বন্দী থাকার বিষয়টি উঠে আসে। বলতে গেলে, এরপরই ললিতাকে মুক্ত করার দাবিতে চলা আন্দোলন গতি পায়। পরে ২০১৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্কা তিমিকে বিপন্ন প্রজাতি বলে ঘোষণা দেয়।
এরপর প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংস্থা ললিতার মুক্তির জন্য আদালতের কড়া নেড়েছিল। কিন্তু তাদের সেসব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। সর্বশেষ সেটির মুক্তি জন্য পশুপাখিদের সুরক্ষায় কাজ করা প্রতিষ্ঠান ফ্রেন্ডস অব ললিতার সঙ্গে মায়ামি সিকুয়ারিয়ামের একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী মুক্তি দেওয়ার কথা ছিল ললিতার।