বোয়িং
বোয়িং

বোয়িংয়ের কাছে ২৫ হাজার কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর

মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে প্রায় একই কায়দায় বিধ্বস্ত বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের নিহত যাত্রীদের পরিবার এই আমেরিকান উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানির কর্তা ব্যক্তিদের বিচার এবং রেকর্ড ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো প্রায় আড়াই হাজার কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছে। পরিবারগুলোর পক্ষে আইনি লড়াই করছেন আইনজীবী পল ক্যাসেল। তিনি বলেন, ‘এটা যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী করপোরেট অপরাধ। বোয়িংকে তাদের সীমাহীন অমানবিক অপরাধের মূল্য চুকাতে হবে। তাই ক্ষতিপূরণের এই অঙ্ক ন্যায্য এবং স্পষ্টতই সঠিক।’

ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর পক্ষ থেকে আদালতে পেশ করা ৩২ পাতার ওই আবেদনপত্র দেখেছে বিবিসি।

এতে আইনজীবী ক্যাসেল বলেছেন, ২০১৮ ও ২০১৯ সালের ওই দুটি ঘটনায় ৩৪৬ যাত্রী নিহত হয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের উচিত, যাঁরা বোয়িং পরিচালনা করেন, তাঁদের বিচারের আওতায় আনা।

২০১৮ সালের অক্টোবরে লায়ন এয়ার ফ্লাইটের একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা থেকে উড়াল দেওয়ার মাত্র ১৩ মিনিটের মাথায় জাভা সাগরে বিধ্বস্ত হয় এবং ১৮৯ আরোহীর সবাই প্রাণ হারান।

পরের বছর ২০১৯ সালের মার্চে ইথিওপিয়ান এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজ আদ্দিস আবাবা থেকে উড়াল দেওয়ার মাত্র ৬ মিনিটের মাথায় বিধ্বস্ত হয়ে ১৫৭ আরোহীর সবাই নিহত হন।

উভয় দুর্ঘটনার তদন্তেই ‘ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেমে’ ত্রুটি পাওয়া যায়।

ওই দুই দুর্ঘটনার বিষয়ে গত মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসকে কিছু প্রমাণ দেন বোয়িংয়ের প্রধান নির্বাহী ডেভ ক্যালহাউন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা যে দুঃখের কারণ হয়েছি, তার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী।’

ওই দুই উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় কোম্পানির ভুল ছিল বলেও কংগ্রেস কমিটির সামনে স্বীকার করে নেন ডেভ। বলেন, ‘আমরা অতীত থেকে শিক্ষা গ্রহণ করেছি।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ বোয়িংয়ের বিরুদ্ধে ২০২১ সালে জালিয়াতির অভিযোগে হওয়া একটি ফৌজদারি মামলা পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে ভাবছে। সেবার বোয়িং কর্তৃপক্ষ নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে জালিয়াতি শনাক্ত ও তা প্রতিরোধে তাদের কমপ্লায়েন্স সিস্টেম নতুন করে ঢেলে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি সমঝোতায় এসেছিল।

কিন্তু তারা সেই সমঝোতা চুক্তির প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করছে। গত মাসে কৌঁসুলিরা এমন সিদ্ধান্তে উপনীত হন। কারণ, গত জানুয়ারিতে আলাস্কা এয়ারলাইনসের একটি বোয়িং ৭৩৭ ম্যাক্স উড়োজাহাজের একটি দরজা মধ্য আকাশে খুলে যায়। যদিও পাইলটের বুদ্ধিমত্তায় উড়োজাহাজটি শেষ পর্যন্ত নিরাপদে অবতরণ করে।

ওই মামলা পুনরুজ্জীবিত করার বিষয়ে আগামী ৭ জুলাইয়ের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেবে বিচার বিভাগ।