ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনের দায়িত্ব পালনকালের কয়েকটি গোপনীয় সরকারি নথি তাঁর একটি ব্যক্তিগত দপ্তরে পাওয়া গেছে। গত শরতে এই নথিগুলো পাওয়া যায়। গতকাল সোমবার বাইডেনের আইনজীবীরা এ কথা স্বীকার করেছেন।
বিষয়টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, শিকাগোর অ্যাটর্নিকে বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড। রিপাবলিকান পার্টির কংগ্রেস সদস্যরাও এ বিষয়ে নোটিশ উত্থাপন করতে যাচ্ছেন।
বাইডেনের আইনজীবীরা বলেন, ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক ‘পেন বাইডেন সেন্টার ফর ডিপ্লোমেসি অ্যান্ড গ্লোবাল এনগেজমেন্ট’ দপ্তর বন্ধ করে দেওয়ার সময় নভেম্বরে তাঁরা এসব সরকারি নথির খোঁজ পান।
বাইডেন ২০১৭-১৯ মেয়াদে ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার সাম্মানিক অধ্যাপক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির সঙ্গে সম্পর্কের অংশ হিসেবে এই দপ্তর ব্যবহার করতেন তিনি। বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন বাইডেন।
আরেকটি সূত্র সিএনএনকে বলেছে, বাইডেনের ওই দপ্তরে ১২টিরও কম গোপনীয় সরকারি নথি পাওয়া গেছে। নথিগুলো কি সম্পর্কিত কিংবা কেন সেগুলো বাইডেনের ব্যক্তিগত দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল, তা স্পষ্ট নয়।
আইন অনুযায়ী, সরকারি চাকরি শেষ হলে কেন্দ্রীয় সরকারে দায়িত্ব পালনকারী ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায় দাপ্তরিক নথি ও গোপনীয় দলিলাদি জমা দিয়ে দিতে হয়।
এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিশেষ পরামর্শদাতা রিচার্ড সবার বলেন, গোপনীয় সরকারি নথি হিসেবে চিহ্নিত কয়েকটিসহ খোঁজ পাওয়া দলিলাদি সম্ভবত ওবামা-বাইডেন প্রশাসনের। এ বিষয়ে ন্যাশনাল আর্কাইভস ও বিচার বিভাগকে সহযোগিতা করছে হোয়াইট হাউস।
এমন সময় বাইডেনের ব্যক্তিগত দপ্তরে এসব নথি পাওয়ার ঘটনা ঘটল, যখন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো রিসোর্টে সরকারি গোপনীয় নথি পাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করছেন বিশেষ পরামর্শক জ্যাক স্মিথ। তদন্তের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্ত কর্মকর্তারা ট্রাম্পের কাছ থেকে কমপক্ষে ৩২৫টি গোপনীয় সরকারি নথি উদ্ধার করেছেন।
বাইডেনের ব্যক্তিগত দপ্তরে এ ধরনের গোপনীয় নথি পাওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যে পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন রিপাবলিকানরা। তাঁদের একজন প্রতিনিধি পরিষদের ‘হাউস ওভারসাইট চেয়ারম্যানের’ দায়িত্ব পেতে যাওয়া রিপাবলিকান পার্টির জেমস কোমার।
জেমস কোমার বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভুলভাবে বাসভবনে বা অন্যত্র গোপনীয় সরকারি নথি নিয়ে যাওয়া নিয়ে খুব সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এখন মনে হচ্ছে, তিনিও একই কাজ করেছেন। কী পরিহাস!
গোপনীয় সরকারি নথির বিষয়ে গতকাল সন্ধ্যায় মেক্সিকো সিটিতে সাংবাদিকদের জোর গলায় করা প্রশ্নে এড়িয়ে যান বাইডেন। একটি শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে বর্তমানে তিনি মেক্সিকো সফরে আছেন। সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ডও ছিলেন। তাঁকে প্রেসিডেন্টের বাঁ পাশে বসতে দেখা যায়।