হরেক রকমের টুপি তো দেখতেই পাওয়া যায়। গোল, লম্বা, কোনাকৃতি—কত আকারেরই না টুপি। তাই বলে কারও মাথায় ১৭ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা টুপি কে, কবে দেখেছেন! এমন এক টুপিই তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাসিন্দা জোশুয়া কাইজার। শুধু তা-ই নয়, টুপিটি তৈরি করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসেও নাম লিখিয়েছেন তিনি। তবে এ জন্য তাঁকে রীতিমতো সাধনাই করতে হয়েছে বলা যায়।
এর আগে ২০১৮ সালে ১৫ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা টুপি তৈরি করে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছিলেন ওডিলন ওজারে নামের এক ব্যক্তি। সে রেকর্ডই এবার ভেঙেছেন কাইজার। মাথায় ইয়া লম্বা টুপি পরা ওডিলনের একটি ছবি দেখেই মূলত লম্বা টুপি তৈরি করতে অনুপ্রাণিত হন পেন স্টেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী কাইজার।
করোনা মহামারি চলার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় তখন বন্ধ ছিল। একদিন কাইজার তাঁর ল্যাপটপে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের ওয়েবসাইট দেখছিলেন। তখনই ওডিলন ওজারের লম্বা টুপি পরা ছবিটি দেখতে পান। ছবিটি দেখার পর থেকে সেটি তাঁর চোখের সামনে ভাসছিল।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কাইজার বলেছেন, ‘আমি আমার ল্যাপটপ বন্ধ করলাম এবং লম্বা টুপির জন্য উপকরণ খুঁজতে লাগলাম। বিশ্বাস ছিল যে দ্রুতই রেকর্ডটি করতে পারব এবং ইতিহাসের পাতায় আমার নাম লেখাতে পারব।’
শুরুতে কার্ডবোর্ড ও সেগুলো আটকে রাখার উপকরণ ব্যবহার করে লম্বা টুপি বানানোর চেষ্টা চালান কাইজার। তবে তা পাঁচ ফুটের বেশি হয়নি। তা ছাড়া কার্ডবোর্ডগুলো তিনি খুব একটা শক্ত করে জোড়া দিতে পারেননি। এ জন্য টুপিটি তাঁর মাথার ওপর সোজা হয়ে থাকছিল না।
এরপর অন্য বুদ্ধি আঁটলেন কাইজার। এবার কাঠের টুকরা নাট-বল্টু দিয়ে জোড়া দিয়ে টুপিটি বানানোর চেষ্টা করেন। তবে এবারও ব্যর্থ। ১৫ ফুটের বেশি উচ্চতার এ টুপি আকাশের দিকে সোজা হয়ে থাকার মতো হয়নি। এরপর রড ব্যবহার করে টুপি তৈরির কথা ভাবেন। তাতেও কাজ হয়নি। রডের কারণে টুপি ভারী হয়ে যাওয়ায় তা মাথায় রাখা সম্ভব হয়নি।
একবার তার দিয়েও টুপি বানানোর কথা ভেবেছিলেন কাইজার। পরে সেই পরিকল্পনা বাদ দেন। শেষ পর্যন্ত ফিলাডেলফিয়া ইগলসের একটি আবর্জনার ক্যান দেখে তাঁর মাথায় নতুন বুদ্ধি আসে। আবর্জনার ওই বাক্সকেই টুপির ভিত্তি করার সিদ্ধান্ত নেন। এরপর এটির সঙ্গে ফোম জুড়ে দেন। করেন ইচ্ছেমতো লম্বা। পরে সান্তা ক্লজের টুপির মতো লাল কাপড়ে মুড়ে এটিকে দেন টুপির অবয়ব। ২৬ দশমিক ৪ পাউন্ডের টুপিটা পরে প্রয়োজনীয় ৩২ দশমিক ৮ ফুট দূরত্বও হেঁটে পার হন তিনি। সেই সঙ্গে করে ফেলেন বিশ্ব রেকর্ড।