যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান বব মেনেনডেজ পদত্যাগ করেছেন। মেনেনডেজ ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরুর পর সিনেটের প্রভাবশালী বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ ছাড়লেন মেনেনডেজ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের কৌঁসুলিদের অভিযোগ, মেনেনডেজ ও তাঁর স্ত্রী নাডিনে আর্সলানিয়ান মিসর সরকারের সহায়তা পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে কয়েক হাজার ডলারের ঘুষ নিয়েছিলেন। যদিও এই দম্পতি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বব মেনেনডেজের বয়স ৬৯ বছর। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিক নিউ জার্সির সিনেটর। নিজ অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্র্যাট নেতাদের মধ্য থেকেই তাঁর পদত্যাগের দাবি উঠেছে।
তবে সিনেট কমিটির প্রধানের পদ ছাড়লেও সিনেটর পদ থেকে পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মেনেনডেজ।
মার্কিন সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা চাক শুমার গতকাল শুক্রবার জানান, যে অভিযোগ উঠেছে, সেটির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেনেনডেজ।
সহকর্মী মেনেনডেজ সম্পর্কে চাক শুমার আরও বলেন, মেনেনডেজ একজন নিবেদিতপ্রাণ জনসেবক। তিনি সব সময় নিউ জার্সির জনগণের জন্য কঠোর লড়াই করেছেন।
এর আগে ২০১৫ সালেও সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল মেনেনডেজকে। ওই সময় ফ্লোরিডার এক চক্ষুচিকিৎসকের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। যদিও ওই ঘটনায় বিচারকেরা সর্বসম্মত রায় দিতে পারেননি।
২০১৫ সালে মেনেনডেজ যখন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন, তখন সাময়িক সময়ের জন্য কমিটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট সিনেটর বেন কার্ডিন।
এখন মেনেনডেজ ও নাদিনে দম্পতির বিরুদ্ধে নিউ জার্সির তিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে নগদ অর্থ, সোনা, দামি গাড়ি ও একটি বাড়ির বন্ধকের জন্য ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে।
কৌঁসুলিদের অভিযোগ, মেনেনডেজ ও তাঁর স্ত্রী গোপনে প্রভাব খাটিয়ে মিসরীয় সরকারকে সহায়তা এবং তিন ব্যক্তিকে আর্থিক সুবিধা দিতে ঘুষ নিয়েছিলেন। ওই তিন ব্যক্তি হলেন ওয়ায়েল হানা, জোসে উরিবে ও ফ্রেড ডাইবস।
গতকাল অবমুক্ত করা ৩৯ পাতার অভিযোগে বলা হয়েছে, মেনেনডেজের রাজনৈতিক অবস্থান ও ক্ষমতা তাঁকে এ ধরনের দুর্নীতিতে জড়াতে উৎসাহিত করেছে।
মেনেনডেজ এক বিবৃতিতে বলেছেন, এসব অভিযোগের পুরোটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
আর আইনজীবীদের মাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মেনেনডেজের স্ত্রী নাডিনে আর্সলানিয়ান বলেন, তিনি নির্দোষ। তিনি আশা করছেন, আদালতে নিজের এ অবস্থান প্রমাণ করতে পারবেন।