‘হিন্দুস ফর আমেরিকা ফার্স্ট’ নামে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হিন্দুদের একটি সংগঠন আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থনের ঘোষণা দিয়েছে। সম্প্রতি প্রতিষ্ঠিত সংগঠনটি জানিয়েছে, ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী কমলা হ্যারিসের বিপক্ষে পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া ও নর্থ ক্যারোলাইনার মতো দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যে শিগগিরই নির্বাচনী প্রচারে নামবে তারা।
স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারে নামার এ ঘোষণা দেন হিন্দুস ফর আমেরিকা ফার্স্টের চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা উৎসব সান্দুজা। তাঁর মতে, কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক অস্থিতিশীল হয়ে পড়তে পারে।
উৎসব সান্দুজা বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা, কমলা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে সুপ্রিম কোর্টে উদারপন্থীদের নিয়োগ দেবেন, যাঁরা সর্বোচ্চ আদালতকেই বদলে দেবেন। এটা হলে এশিয়ান-আমেরিকান ভোটাররা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
বাইডেন–হ্যারিস প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে পারেনি দাবি করে উৎসব সান্দুজা বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পর যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ক্ষমতাধর ব্যক্তি কমলা। তাঁদের প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীর অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কিছুই করেনি। অবৈধ অভিবাসীদের কারণে আমরা অপরাধ ও মাদক চোরাচালানের রেকর্ড হতে দেখেছি। শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব পড়েছে সংখ্যালঘুদের ওপর, যাঁদের বেশির ভাগই এশিয়ান–আমেরিকান ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিক।’
উৎসব সান্দুজা বাইডেন–হ্যারিস প্রশাসনের সমালোচনা করলেও সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মেধাভিত্তিক অভিবাসননীতির প্রশংসা করেন। ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকাকালে প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রশংসা করেন তিনি।
উৎসব সান্দুজার মতে, ট্রাম্প ‘খুব বেশি ভারতপন্থী’। ট্রাম্প ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সম্পর্ক একটি চমৎকার গড়ে তুলেছিলেন। তাঁরা দুজনে প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত বেশ কিছু প্রকল্পে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন, যা চীনকে মোকাবিলায় ভারতের কাজে লাগবে।
কমলা হ্যারিস ভারত সরকার ও ভারতীয়দের নিয়ে অসংখ্য ‘অপমানজনক মন্তব্য’ করেছেন বলে দাবি করে সান্দুজা বলেন, কিন্তু ট্রাম্প ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে কখনো কোনো মন্তব্য করেননি।
কমলা হ্যারিস প্রেসিডেন্ট হলে তা ভারত–যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের জন্য খুবই ক্ষতিকর হবে বলে মনে করেন উৎসব সান্দুজা। তিনি বলেন, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, উইসকনসিন, অ্যারিজোনা ও নেভাদার মতো দোদুল্যমান অঙ্গরাজ্যের হিন্দুদের কমলার বিরুদ্ধে সংগঠিত করার কাজ করছে হিন্দুস ফর আমেরিকা ফার্স্ট।
বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে হিন্দুরা উদ্বিগ্ন বলে জানান উৎসব সান্দুজা। তিনি বলেন, ‘বিষয়টি তুলে ধরতে আমরা সংশ্লিষ্ট সব রাজনৈতিক পক্ষের প্রতি অনুরোধ জানাব।’ বাংলাদেশের হিন্দুরা কষ্টে আছেন বলে এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
উৎসব সান্দুজা বলেন, ‘বেশ কিছু বিষয়ে ট্রাম্পকে কৃতিত্ব দিতে চাই। তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর স্বীকার করেছিল (ভারত) আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মতো উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে হিন্দুরা নিপীড়নের শিকার। হিন্দুদের গণহত্যার স্বীকৃতিও তিনিই দিয়েছিলেন।’