যুক্তরাষ্ট্রের অতি গোপন গোয়েন্দা নথি ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার জ্যাক টাশেরার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার দেশটির ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরের একটি আদালতে গুপ্তচরবৃত্তি আইনের অধীনে অভিযোগগুলো আনা হয়।
গতকাল সকালে কারাগারের পোশাকে আদালতে হাজির করা হয় ২১ বছর বয়সী জ্যাক টাশেরাকে। তাঁর হাতে ছিল হাতকড়া। আদালতে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ দুটি হলো, জাতীয় প্রতিরক্ষাবিষয়ক তথ্য অবৈধভাবে নিজের কাছে রাখা ও ছড়িয়ে দেওয়া এবং গোপন তথ্য ও প্রতিরক্ষাবিষয়ক নথিপত্র অনুমোদন ছাড়া সরিয়ে নেওয়া। প্রথম অভিযোগটি প্রমাণিত হলে টাশেরার সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। অপরদিকে দ্বিতীয় অভিযোগের পরিণতি হতে পারে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের কারাদণ্ড।
গত বৃহস্পতিবার টাশেরাকে ম্যাসাচুসেটসের নর্থ দিগটন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই। তাঁর বিরুদ্ধে যেসব নথি ফাঁসের অভিযোগ আনা হয়েছে, সেখানে ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর বিষয়ে মার্কিন গোপন তথ্য রয়েছে। এসব তথ্য ফাঁসের ঘটনায় বেকায়দায় পড়েছে ওয়াশিংটন। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এমন গোপন নথিগুলো আসলেই কতটা সুরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
টাশেরা মার্কিন বিমানবাহিনীর এয়ার ন্যাশনাল গার্ডের একজন সদস্য। তাঁর কর্মক্ষেত্র ছিল ম্যাসাচুসেটসের অটিস ঘাঁটিতে। ওই ঘাঁটিতে কাজের সূত্রেই গোপনীয় নথি দেখা ও ব্যবহারের সুযোগ পেতেন। সন্দেহ করা হচ্ছে, এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে গোপন নথি সরিয়ে ফেলতেন তিনি।
গোপন নথিগুলো প্রথম ফাঁস করা হয় বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ ডিসকর্ডের একটি চ্যাট গ্রুপে। ওই গ্রুপ পরিচালনা করতে টাশেরা। আদালতে এফবিআইয়ের জমা দেওয়া নথিপত্রে বলা হয়েছে, টাশেরা প্রথমে গোপন নথিগুলোর ছোট ছোট অংশ চ্যাট গ্রুপটিতে প্রকাশ করতেন। পরে গত জানুয়ারিতে নথিগুলোর ছবি তুলে প্রকাশ করা শুরু করেন তিনি। তবে ফাঁস হওয়া নথিগুলো চ্যাট গ্রুপের বাইরে ছড়িয়ে পড়ার আগপর্যন্ত বিষয়টি টের পাননি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগনের কর্মকর্তারা। বিষয়টি জানার পরই তাঁরা নথি ফাঁসের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির সন্ধানে নামেন।
এদিকে নথি ফাঁসের ঘটনা তদন্তে ‘দ্রুত পদক্ষেপ’ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, আরও স্পর্শকাতর তথ্য ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে এবং সেগুলো নিরাপদে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।