মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী পদে অবিচল থাকতে ও সরে দাঁড়ানোর চাপ উপেক্ষা করার পরামর্শ দিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। গতকাল রোববার মেরিল্যান্ড অঙ্গরাজ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবকাশযাপন কেন্দ্র ক্যাম্প ডেভিডে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে এ পরামর্শ দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকান দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বিতর্কে ভালো করতে পারেননি বাইডেন। এরপর বাইডেনের নিজ দল, সাধারণ ভোটার ও বিশেষজ্ঞের মধ্যে বাইডেনের সরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়তে থাকে।
গতকাল ক্যাম্প ডেভিডে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৈঠক করার দিনই সিবিএস নিউজ ও ইউগভের প্রকাশিত এক জরিপে দেখা যায়, ডেমোক্রেটিক পার্টির ৭২ শতাংশ নিবন্ধিত ভোটার দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের মতো বাইডেনের মানসিক স্বাস্থ্য নেই বলে মনে করেন। অন্যদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের প্রায় অর্ধেকে তাঁর সরে দাঁড়ানো উচিত বলে মত দিয়েছেন।
কিন্তু বাইডেনের প্রচার দল ও পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারাতে এখনো বাইডেনই সবচেয়ে বড় ভরসা।
ক্যাম্প ডেভিডে পারিবারিক বৈঠকটি ফটোশুটের জন্য আগে থেকে নির্ধারণ করা ছিল। তারকা চিত্রগ্রাহক অ্যানি লেবোভিটজকে এ জন্য ঠিক করা হয়েছিল। এতে বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেন, তাঁর সন্তান ও নাতি-নাতনিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বাইডেনকে ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী থাকার পক্ষে পরিবারের সদস্যদের জোর সমর্থনের বিষয়ে প্রথম খবর প্রকাশ করে নিউইয়র্ক টাইমস। পরবর্তীকালে বিবিসির যুক্তরাষ্ট্রের অংশীদার সিবিএস নিউজ এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে।
গত বৃহস্পতিবারের বিতর্কে খারাপ করার পেছনে বাইডেনের পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, সহযোগীরা তাঁকে ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারেননি। বাইডেনের দলের শীর্ষ নেতা ও দাতাদের একাংশও একই ধরনের মনোভাব দেখিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে। তবে জিল বাইডেন এমনটি মনে করেন না বলে তিনি নিজেই সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন।
৮১ বছর বয়সী বাইডেনের পাশাপাশি তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্পের বয়স নিয়েও বৃহস্পতিবারের বিতর্কের আগে থেকে আলাপ-আলোচনা চলছিল। তবে বৃহস্পতিবারের বিতর্কে বাইডেনের কণ্ঠস্বরের সমস্যা ছিল, এ জন৵ তিনি ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না। তা ছাড়া তিনি বিভিন্ন প্রশ্নেরও ঠিকঠাক উত্তর দিতে পারছিলেন না। এ অবস্থায় তাঁর সরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়তে থাকে।
নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ড এক মতামতধর্মী লেখায়ও বাইডেনকে সরে দাঁড়াতে পরামর্শ দিয়েছে। ওই লেখায় বলা হয়, ‘এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় যে জনসেবাটি বাইডেন দিতে পারেন, সেটা হলো আবার নির্বাচন না করার ঘোষণা দেওয়া।’