যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরলে দেশটির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত ও মূল্যস্ফীতি পুনরুজ্জীবিত হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন ১৬ জন নোবেল পুরস্কারজয়ী অর্থনীতিবিদ। এক চিঠিতে এ সতর্কবার্তা উচ্চারণ করেছেন তাঁরা।
গতকাল মঙ্গলবার এ চিঠি প্রকাশ করা হয়। চিঠিতে ওই অর্থনীতিবিদেরা বলেন, আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প জিতলে তিনি ‘আর্থিকভাবে দায়িত্বহীন বাজেটের’ মাধ্যমে বিশৃঙ্খলা উসকে দিতে ও উচ্চ মূল্যস্ফীতি পুনরুজ্জীবিত করতে পারেন।
অর্থনীতিবিদেরা আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক সাফল্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামকের মধ্যে রয়েছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থনীতি ও রাজনৈতিক নিশ্চয়তা। অন্যান্য দেশের সঙ্গে গভীর সম্পর্কে আবদ্ধ যুক্তরাষ্ট্রের মতো কোনো দেশের জন্য আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করা এবং বহির্বিশ্বের সঙ্গে স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল সম্পর্ক বজায় রাখাও অপরিহার্য।’
‘ডোনাল্ড ট্রাম্প, তাঁর পদক্ষেপ ও নীতির অস্পষ্টতা এই স্থিতিশীলতা এবং বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান হুমকিতে ফেলবে’ বলে মনে করেন চিঠিতে স্বাক্ষরকারী অর্থনীতিবিদেরা।
এই অর্থনীতিবিদেরা যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন। বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারির পর থেকে মার্কিন শ্রমবাজারের পুনরুত্থান ‘উল্লেখ করার মতো দৃঢ় ও ন্যায়সংগতভাবে’ হয়েছে।
নোবেলজয়ী এই অর্থনীতিবিদেরা বলেন, ‘যদিও অনেক অর্থনৈতিক নীতির সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে আমাদের প্রত্যেকের আলাদা মত রয়েছে, কিন্তু একটা বিষয়ে আমরা একমত যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে জো বাইডেনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি অনেক ভালো।’
চিঠিতে বলা হয়, বাইডেন তাঁর শাসনামলের প্রথম চার বছরে দেশের অর্থনীতিতে বড় বিনিয়োগবান্ধব কিছু আইন পাস করেছেন। এর মধ্যে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা-সংশ্লিষ্ট আইন উল্লেখযোগ্য। সম্ভবত এগুলো উৎপাদনসক্ষমতা ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়াচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদি মূল্যস্ফীতির চাপ কমাচ্ছে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানান্তর সহজ করছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইট এক্সিওসে প্রথম এ চিঠির বিষয়ে খবর প্রকাশ করা হয়। যে কজন নোবেলজয়ী চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন, তাঁদের মধ্যে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জোসেফ স্টিগলিৎজ, ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রবার্ট শিলার ও স্যার অ্যানগাস ডিটনও রয়েছেন।
আগামী নভেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ পর্যন্ত পাওয়া জনমত জরিপগুলোতে বাইডেন-ট্রাম্প হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার প্রথম প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হচ্ছেন এ দুই নেতা।
অর্থনীতিবিদেরা যা-ই বলুন, সম্ভাব্য ভোটাররা অবশ্য বারবারই ট্রাম্পকে অর্থনীতির জন্য বেশি আস্থাশীল বলছেন।