যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বাঁয়ে) ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এপেক সম্মেলনের এক ফাঁকে পেরুর রাজধানী লিমার একটি হোটেলে, ১৬ নভেম্বর ২০২৪
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বাঁয়ে) ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এপেক সম্মেলনের এক ফাঁকে পেরুর রাজধানী লিমার একটি হোটেলে, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা সি চিন পিংয়ের

যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে সর্বশেষ বৈঠকে গতকাল শনিবার সি এই প্রত্যয় ঘোষণা করেছেন। বৈঠকে তাঁদের মধ্যে সাইবার অপরাধ থেকে বাণিজ্য, তাইওয়ান ও রাশিয়ার মতো মতবিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

পেরুর রাজধানী লিমার যে হোটেলে চীনের প্রেসিডেন্ট অবস্থান করছিলেন, সেখানেই তাঁদের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার (এপেক) সম্মেলন উপলক্ষে বর্তমানে তাঁরা লিমায় অবস্থান করছেন। সম্মেলনের এক ফাঁকে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাইডেন ও সির মধ্যে গত সাত মাসের মধ্যে এটিই প্রথম বৈঠক।

করমর্দন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (বাঁয়ে) ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং। এপেক সম্মেলনের এক ফাঁকে পেরুর রাজধানী লিমার একটি হোটেলে, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

সি বাইডেনকে বলেছেন, সদ্য সমাপ্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পরেও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি স্থিতিশীল, স্বাস্থ্যকর ও টেকসই সম্পর্ক রাখার বিষয়ে চীনের লক্ষ্য অপরিবর্তিত রয়েছে। তবে দুই দেশের সম্পর্কের মধ্যে ‘উত্থান-পতন’ থাকার কথা স্বীকার করেছেন সি।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে সি বলেছেন, ‘চীন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখতে, সহযোগিতা বাড়াতে এবং পার্থক্য সামলে চলার বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।’

দুই নেতা সব সময় একমত না হলেও নিজেদের মধ্যে ‘অকপট’ ও ‘খোলাখুলি’ আলোচনা হয়েছে, সিকে এমনটাই বলেছেন বাইডেন।

ট্রাম্পের দায়িত্ব নেওয়ার দুই মাস আগে বাইডেন ও সির মধ্যে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো। ট্রাম্প এরই মধ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানির ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন। এটা তাঁর ‘সবার আগে আমেরিকা’ বাণিজ্যব্যবস্থার অংশ। চীন এসব পদক্ষেপের বিরোধিতা করছে।

ট্রাম্প চীনা পণ্যে বড় ধরনের শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েই থামছেন না। রিপাবলিকান পার্টির নবনির্বাচিত এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট চীনের বিষয়ে কঠোর মনোভাবসম্পন্ন ব্যক্তিদেরও নিজের প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দিতে যাচ্ছেন। এসব ব্যক্তির মধ্যে মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও মাইক ওয়াল্টজকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা করার পরিকল্পনা অন্যতম।

বাইডেন চীনের সঙ্গে উত্তেজনা কমাতে চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি চীন-সংশ্লিষ্ট একটি পক্ষ যুক্তরাষ্ট্র ও প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর প্রচার শিবিরের কর্মকর্তাদের মধ্যকার টেলিফোন যোগাযোগ ফাঁস করায় ক্ষুব্ধ হয়েছে ওয়াশিংটন। তা ছাড়া তাইওয়ানের ওপর বেইজিংয়ের চাপ বাড়ানো ও রাশিয়ার প্রতি চীনের সমর্থন নিয়ে উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন।

বৈঠকে উত্তর কোরিয়ার বিষয়েও চীনের সহযোগিতা চেয়েছেন বাইডেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার গভীর সম্পর্ক ও ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে দেশটির সেনা মোতায়েনও উদ্বিগ্ন ওয়াশিংটন।