সৌদি আরবের কাছে অস্ত্র বিক্রিসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছেন প্রভাবশালী ডেমোক্র্যাট সিনেটর বব মেনেন্দেজ। গতকাল সোমবার মার্কিন সিনেট ফরেন রিলেশন কমিটির ডেমোক্রেটিক চেয়ারম্যান এ আহ্বান জানান। তাঁর অভিযোগ, ওপেক প্লাসের তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা ইউক্রেনে যুদ্ধে কার্যত রাশিয়াকে সমর্থন করার নামান্তর। খবর রয়টার্সের
সৌদি নেতৃত্বাধীন তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস বৈশ্বিক সরবরাহের ২ শতাংশ পরিমাণ তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণা দেয়। এতে প্রতিযোগিতার বাজারে পেট্রলের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।
অন্যদিকে ইউক্রেনে হামলার পর জ্বালানি খাতে রাশিয়ার মুনাফা সীমিত করতে চাইছে ওয়াশিংটন। হোয়াইট হাউস বলেছে, রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের প্রভাব মোকাবিলা করছে বিশ্ব। এর মধ্যে তেল উৎপাদন কমানোর ঘোষণাকে ‘অদূরদর্শী’ বলে তিরস্কার করেছেন ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আক্রমণাত্মক পদক্ষেপ গ্রহণে সিনেটর বব মেনেন্দেজের আহ্বানকে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে ক্রমবর্ধমান টানাপোড়েনের আরেকটি লক্ষণ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে বব মেনেন্দেজ বলেন, ‘মার্কিন সেনা ও স্বার্থরক্ষায় একান্ত প্রয়োজন ছাড়া অস্ত্র বিক্রি, নিরাপত্তা সহযোগিতাসহ যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সব ধরনের সহযোগিতা স্থগিত করতে হবে।’
মেনেন্দেজ বলেন, ‘ইউক্রেনে যুদ্ধের বিষয়ে সৌদিরাজ যতক্ষণ পর্যন্ত দেশটির অবস্থান পুনর্বিবেচনা না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত রিয়াদের সঙ্গে আমি কোনো ধরনের সহযোগিতার বিষয়ে সমর্থন জানাতে পারি না।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি ইঙ্গিত করে মেনেন্দেজ বলেন, ‘এই সংঘাতে উভয় পক্ষে থাকার কোনো সুযোগ নেই। হয় আপনি একজন যুদ্ধাপরাধীকে একটি সমগ্র দেশকে মানচিত্র থেকে হিংস্রভাবে মুছে ফেলা থেকে বিরত করার চেষ্টায় বাকি মুক্ত বিশ্বকে সমর্থন করবেন অথবা আপনি তাঁকে সমর্থন করবেন।’
প্রভাবশালী এই মার্কিন সিনেটর বলেন, সৌদিরাজ অর্থনৈতিক স্বার্থে তাড়িত হয়ে একটি ভয়ানক সিদ্ধান্তে পরেরটিই বেছে নিয়েছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি ওয়াশিংটনে সৌদি দূতাবাস।
ওপেক প্লাসের ঘোষণার পর গত শুক্রবার পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে গিয়ে ঠেকে। তবে সম্ভাব্য বিশ্বমন্দার শঙ্কার মধ্যে তেলের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে সোমবার প্রতি ব্যারেল ৯৬ দশমিক ১৯ ডলারে স্থির হয়।
তেলের উচ্চমূল্যের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনে বিপাকে পড়তে পারেন বাইডেনের সহকর্মী ডেমোক্র্যাট প্রার্থীরা। এই নির্বাচনে কংগ্রেসে নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য লড়ছেন তাঁরা।
গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অস্ত্র চুক্তিগুলো পর্যালোচনা করে থাকে সিনেটের ফরেন রিলেশনস ও প্রতিনিধি পরিষদের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি। সাধারণত তাঁদের সমর্থন ছাড়া এসব চুক্তি অনুমোদন হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্রেতা সৌদি আরব।