সাবেক পর্নো তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে পৌঁছেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ট্রাম্প যখন ম্যানহাটনের ট্রাম্প টাওয়ারে পৌঁছান, তখন সেখানে তাঁর সমর্থক ছিলেন কয়েকজন। এর চেয়ে বেশিসংখ্যক পুলিশ-সাংবাদিকের ভিড় দেখা গেছে।
আজ মঙ্গলবার আদালতে হাজিরা দেবেন ট্রাম্প। এ জন্য গতকাল সোমবার তিনি নিউইয়র্কে পৌঁছান। ট্রাম্পের উপস্থিতি ঘিরে শুধু ম্যানহাটন নয়, পুরো নিউইয়র্কের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। দুপুরের আগেই ট্রাম্প টাওয়ারের আশপাশে মানুষের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রাম্প টাওয়ারসহ ম্যানহাটনের ফিফথ অ্যাভিনিউজুড়ে মোতায়েন করা হয় বাড়তি পুলিশ।
ট্রাম্পকে নিয়ে গণমাধ্যমে আগ্রহ বরাবরই ছিল। এখন তাঁর গ্রেপ্তার হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বের তাবত সংবাদমাধ্যম ফলাও করে এ–সংক্রান্ত খবর প্রচার-প্রকাশ করছে। তাই ট্রাম্প টাওয়ারের সামনে ভিড় করেন অসংখ্য সাংবাদিক। অনেকেই সেখান থেকে ট্রাম্পের নিউইয়র্কে পৌঁছানোর খবর সরাসরি সম্প্রচার করেন।
তবে সাংবাদিক-পুলিশের ভিড়ে সেখানে ট্রাম্পের কয়েকজন সমর্থককেও দেখা গেছে। ব্যানার হাতে বিক্ষোভ করতে দেখা যায় তাঁদের। সেখানে ছিলেন ভিতো দিচিয়ারা। বয়স ৭১ বছর ছুঁয়েছে। থাকেন নিউইয়র্কের লং আইল্যান্ডে। একসময় তিনি ফক্স নিউজে কাজ করতেন।
ভিতোর অভিযোগ, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই রায় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ষড়যন্ত্রের অংশ। আগামী বছরের নির্বাচনে জিতে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে যাওয়া আটকাতেই এই রায় দেওয়া হয়েছে। ভিতো বলেন, ‘ড্রোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট। পরবর্তী প্রেসিডেন্টও হবেন তিনি।’
লাল রঙের পোশাকে নকল ১০০ ডলারের নোট লাগিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এসেছিলেন মারনি হালাসা। তিনি বলেন, একজন পর্নো তারকার মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের ঘুষ দেওয়ার প্রতিবাদে তাঁর এমন বেশ।
উল্লেখ্য, সাবেক পর্নো তারকাকে ঘুষ দেওয়ার মামলায় গত বৃহস্পতিবার ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ২০০৬ সালে স্টরমি ড্যানিয়েলসের সঙ্গে তাঁর যৌন সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। পরে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে এ বিষয়ে মুখ না খুলতে তাঁর পক্ষ থেকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল ড্যানিয়েলসকে। এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ট্রাম্প।
আদালতে হাজিরা দিতে গতকাল ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্য থেকে ব্যক্তিগত একটি উড়োজাহাজে নিউইয়র্কের উদ্দেশে রওনা দেন ট্রাম্প। বোয়িং ৭৫৭ মডেলের ওই উড়োজাহাজটিতে লেখা তাঁর নামটি ছিল চোখে পড়ার মতো।
আড়াই ঘণ্টা পর উড়োজাহাজটি নিউইয়র্কের লাগার্ডিয়া বিমানবন্দরে অবতরণ করে। ট্রাম্পের এই যাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোয় সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।