ইউক্রেনে অভিযান শুরুর পর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর একরাশ নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। এ নিষেধাজ্ঞাগুলো অমান্য করে মস্কোর পাশে দাঁড়ানো চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের জন্য ‘বড় ভুল’ হবে। গত ফেব্রুয়ারিতে চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনালাপের সময় এ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
আজ মঙ্গলবার আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাইডেন। সেখানে তিনি সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ওই আলাপের কথা তুলে ধরেন। গত রোববার সাক্ষাৎকারটি সম্প্রচার করা হয়।
সাক্ষাৎকারে বাইডেন বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে শীতকালীন অলিম্পিকের সময় সি চিন পিংয়ের সঙ্গে দেখা করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এর পরপরই সি চিন পিংয়ের সঙ্গে ফোনে আলাপ করেন তিনি। সি-পুতিনের ওই সাক্ষাতের পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে অভিযান শুরু করে মস্কো।
চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তখন কী কথা হয়েছিল, তা সাক্ষাৎকারে তুলে ধরেন বাইডেন। তিনি বলেন, ‘(সি চিন পিংকে) আমি বলেছিলাম, রাশিয়ার ওপর যেসব নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো লঙ্ঘন করার পরও আপনি যদি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যরা চীনে বিনিয়োগ চালিয়ে যাবে, তাহলে আমি মনে করি, আপনি বড় ভুল করছেন। তবে আপনি কী করবেন, সে সিদ্ধান্ত আপনার।’
মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভাষ্যমতে, সি চিন পিংকে তিনি ‘হুমকি’ দেওয়ার জন্য ফোন করেননি। এর উদ্দেশ্য ছিল, পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাগুলো আমলে না নেওয়ার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করা। তবে এখন পর্যন্ত চীন সমরাস্ত্র বা অন্য কোনো সহায়তা নিয়ে রাশিয়ার পাশে দাঁড়িয়েছে, এমন কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে চাপে থাকা রাশিয়ার অর্থনীতিকে সচল রাখতে অনেকটা সহায়তা করেছে চীন। এ থেকে অবশ্য বেইজিং সুবিধাও নিচ্ছে। রাশিয়ার পণ্যের জন্য বিকল্প বাজার হয়ে উঠেছে চীন। রাশিয়ার কম দামি জ্বালানি তেলেরও বড় ক্রেতা তারা।
চীন-রাশিয়ার ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে গত সপ্তাহে পুতিনের একটি মন্তব্যের মধ্য দিয়ে। ইউক্রেন সংকট ঘিরে চীনের ‘ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থানের’ জন্য সি চিন পিংয়ের প্রশংসা করেছিলেন তিনি। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে বৈঠকের সময় পুতিনকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, মস্কো-বেইজিং বন্ধুত্বের সম্পর্কের কোনো ‘সীমা থাকবে না’।