নিজে কখনো পাদপ্রদীপের আলোয় থাকতে চাননি; বরং আড়ালে থেকে স্বামীর রাজনৈতিক জীবনের উন্নতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন জে ডি ভ্যান্সের স্ত্রী ভারতীয় বংশোদ্ভূত উষা চুলুকুরি ভ্যান্স।
যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান সিনেটর ভ্যান্স এখন রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট। গতকাল সোমবার উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যের মিলওয়াকিতে দলটির জাতীয় সম্মেলনে ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়। আর ভ্যান্সকে নিজের রানিং মেট হিসেবে বেছে নেন ট্রাম্প। যিনি একসময় ট্রাম্পের কড়া সমালোচনা করেছিলেন।
ভ্যান্সের সঙ্গে উষার প্রথম দেখা হয় ২০১৩ সালে ইয়েল ল স্কুলে। তাঁরা দুজনই খ্যাতনামা ওই ল স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন। নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘শ্বেতাঙ্গ আমেরিকায় সামাজিক অবক্ষয়’ বিষয়ে একটি আলোচনা দলে তাঁরা উভয়ই যুক্ত হয়েছিলেন।
‘উষা আমাকে অবশ্যই একটু একটু করে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে এবং যদি আমি কিছুটা অহংকারী হয়েও উঠি বা নিজেকে নিয়ে সামান্য গর্বিতও হই, আমি শুধু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিই যে সে (উষা) আমার চেয়ে অনেক বেশি পারদর্শী।’ডোনাল্ড ট্রাম্পের রানিং মেট জে ডি ভ্যান্স
এই বিষয়টিই ভ্যান্সকে তাঁর স্মৃতিকথা ‘হিলবিলি এলেজি’ লিখতে উৎসাহিত করে। ভ্যান্সের এই বইটি ২০১৬ সালে সর্বাধিক বিক্রীত বইয়ের তালিকায় স্থান পেয়েছিল। ২০২০ সালে রন হাওয়ার্ডের পরিচালনায় এই স্মৃতিকথা অবলম্বনে একই নামে সিনেমা তৈরি করা হয়।
৩৯ বছর বয়সী ভ্যান্স বলেছেন, তিনি স্ত্রী উষাকে তাঁর ‘ইয়েল তাত্ত্বিক গুরু’ মনে করেন। ইয়েল ল স্কুলে তাঁরা সহপাঠী ছিলেন।
উষার লিংকডইন প্রোফাইল অনুযায়ী, আইন বিষয়ে পড়ার আগে তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ‘গেটস স্কলার’। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি এমফিল করেছেন। তাঁর থিসিসের বিষয় ছিল প্রাক্–আধুনিক ইতিহাস।
ভ্যান্স ও উষা ২০১৪ সালে বিয়ে করেন। এ দম্পতির তিনটি সন্তান রয়েছে।
উষার মা–বাবা ভারত থেকে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সানদিয়াগোর শহরতলিতে জন্ম ও বেড়ে ওঠা উষা একসময় নিবন্ধিত ডেমোক্র্যাট ভোটার ছিলেন।
কর্মজীবনে উষা বিচারপতি ব্রেট কাভানাফের অধীনে কাজ করেছেন। কাভানাফ এখন সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি। এরপর উষা সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি জন রবার্টসের অধীনেও কাজ করেছেন।
২০২০ সালে মেগিন কেলি শোতে ভ্যান্স বলেছিলেন, ‘উষা আমাকে অবশ্যই একটু একটু করে বাস্তবে ফিরিয়ে আনে এবং যদি আমি কিছুটা অহংকারী হয়েও উঠি বা নিজেকে নিয়ে সামান্য গর্বিতও হই, আমি শুধু নিজেকে এটা মনে করিয়ে দিই যে সে (উষা) আমার থেকে অনেক বেশি পারদর্শী।’
‘মানুষ বিশ্বাসই করতে পারবে না যে সে কতটা বুদ্ধিদীপ্ত এবং দক্ষ। সে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এক হাজার পাতার বই পড়ে ফেলতে পারে।’ বলছিলেন ভ্যান্স তাঁর স্ত্রীই তাঁকে পরামর্শ দেন বলেও জানিয়েছিলেন ভ্যান্স।
অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে স্ত্রীর এই দক্ষতা ভ্যান্সের এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।