সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের নানা মানসিক সমস্যা তৈরি করে
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে শিশু বা কিশোর-কিশোরীদের নানা মানসিক সমস্যা তৈরি করে

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপে সিগারেটের প্যাকেটের মতো সতর্কবাণী চান যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল

সিগারেটের প্যাকেটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অ্যাপেও বাধ্যতামূলকভাবে সতর্কবাণী চান যুক্তরাষ্ট্রের সার্জন জেনারেল বিবেক মার্থি। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তরুণদের জন্য, বিশেষত কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন ক্ষতিকর। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাপে সতর্কবাণী লেখা থাকা দরকার।

গতকাল সোমবার নিউইয়র্ক টাইমসে লেখা এক উপসম্পাদকীয়তে বিবেক মার্থি তাঁর মত তুলে ধরেন।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জনস্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র বিবেক মার্থি বলেন, শুধু এ ধরনের সতর্কবাণী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোকে তরুণদের জন্য নিরাপদ করবে না। তবে এতে সচেতনতা বাড়বে, আচরণে পরিবর্তন আসবে। তামাক নিয়ে গবেষণায় এ ধরনের ফল পাওয়া গেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অ্যাপে এ ধরনের সতর্কবাণী লেখার জন্য তা নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে আইন পাস হতে হবে। অর্থাৎ তা বেশ সময়সাপেক্ষ বিষয়।

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো শিশুদের জন্য ক্ষতিকর বলে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন যুব অধিকারবিষয়ক পরামর্শক ও যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতাদের একাংশ। এসব ক্ষতির মধ্যে মনোযোগের সময় কমে যাওয়া, অনলাইন হয়রানি অন্যতম।

মার্কিন সার্জন জেনারেল বলেন, সময় এসেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর অ্যাপগুলোতে এই সতর্কবাণী লেখার যে ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের বড় ধরনের ক্ষতি করে’।

এই মতামত সম্পর্কে জানতে ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের মূল প্রতিষ্ঠান মেটা এবং টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

এই তিন কোম্পানিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স ও বার্তা আদানপ্রদানের অ্যাপ ডিজকর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তারা (সিইও) গত জানুয়ারিতে মার্কিন সিনেটে অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা-বিষয়ক একটি শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন। সেখানে সিনেটররা তাঁদের নানা প্রশ্নে জর্জরিত করেন। রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সেই সিইওদের উদ্দেশে বলেন, যৌন অপরাধীদের হাত থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করতে না পারায় ‘আপনাদের হাতে রক্তের দাগ লেগে আছে’।

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্য উদ্বেগ, বিষণ্নতা ও অন্য মানসিক অসুস্থতার মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশুদের বাঁচাতে আইন প্রণয়নের চেষ্টা করছে।

নিউইয়র্ক রাজ্যের আইনপ্রণেতারা অভিভাবকদের সম্মতি ছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সীদের ‘আসক্তিমূলক’ বিষয়বস্তু থেকে বাঁচাতে চলতি মাসে আইন পাস করেছেন।
গত মার্চে ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস ১৪ বছরের কম বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং ১৪ ও ১৫ বছর বয়সীদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে অভিভাবকের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক-সংক্রান্ত একটি আইনে স্বাক্ষর করেছেন।