টুইটারের পেছনে কম সময় দেবেন এর নতুন মালিক ইলন মাস্ক। গত মাসে ৪ হাজার ৪০০ কোটি মার্কিন ডলারে টুইটার কেনার পর এ প্ল্যাটফর্মে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেছেন তিনি। এর পেছনে তিনি রাতদিন খাটছেন বলেও দাবি করেছেন। কিন্তু গতকাল বুধবার ডেলাওয়ারের একটি আদালতে হাজির হয়ে তিনি বলেছেন, টুইটারে নতুন নেতৃত্ব খুঁজছেন তিনি। তাঁর কাছে দায়িত্ব দিয়ে টুইটারে কম সময় দেওয়ার কথা ভাবছেন। টুইটারের দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি প্রাতিষ্ঠানিক পুনর্গঠনের কাজ করছেন। এ সপ্তাহের মধ্যে তা শেষ হবে।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ও যুক্তরাষ্ট্রের গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বেও আছেন ইলন মাস্ক। টেসলার একটি বেতনের প্যাকেজ বিষয়ে আদালতে শুনানির জন্য তাঁকে গতকাল বুধবার হাজির হতে হয়। সেখানেই তিনি তাঁর নতুন পরিকল্পনার কথা বলেন।
টুইটারে ইলন মাস্কের প্রচুর সময় দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন টেসলার বিনিয়োগকারীরা। টেসলার শেয়ারের দামও ৩ শতাংশ পড়ে গেছে।
মাস্ক আদালতে দেওয়া তাঁর সাক্ষ্যে বলেন, ‘টুইটার কেনার পর প্রতিষ্ঠানটিকে ঢেলে সাজাতে শুরুতে প্রচুর কাজ করার দরকার। এরপর আমি এখানে সময় কমিয়ে দেব।’ ইলন মাস্ক বলেন, তাঁর কাজে বর্তমানে টেসলার কিছু প্রকৌশলী সাহায্য করছেন। তবে তাঁরা তাঁদের বর্তমান কাজের বাইরে স্বেচ্ছায় এ কাজ করছেন।
টুইটার কেনার পর থেকে গত দুই সপ্তাহে এখানে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছেন তিনি। শুরুতেই এর প্রধান নির্বাহীসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেছেন। এরপর তিনি প্রতিষ্ঠানটির প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করেছেন। গত বুধবার তিনি কর্মীদের দীর্ঘ সময় কাজ করার কথা জানিয়ে মেইল করেছেন। কেউ রাজি না হলে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যেতে বলেছেন।
ওয়াশিংটন পোস্ট-এর বরাত দিয়ে বলা হয়, কর্মকর্তাদের পাঠানো এক ই-মেইলে টুইটারের কর্মীদের মাস্ক বলেন, টিকে থাকতে চাইলে কর্মীদের এভাবে কাজ করতে রাজি হতে হবে। রাজি না হলে তাঁদের তিন মাসের বেতন দিয়ে ছুটি দেওয়া হবে।
মাস্ক বলেন, টুইটার দিনে ৪০ লাখ ডলার লোকসান গুনছে। তাই ছাঁটাই ছাড়া প্রতিষ্ঠানের অন্য কোনো উপায় নেই। প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা সপ্তাহে অন্তত ৪০ ঘণ্টা কাজ করবেন বলে তাঁরা আশা করছেন।
মাস্ক আরও বলেন, বৈশ্বিক মন্দার কারণে বিজ্ঞাপন থেকে টুইটারের রাজস্ব কমে যাচ্ছে। তবে কারিগরি বিনিয়োগকারী সারাহ কুনস্ট বলেছেন, আসল কারণ হলো মাস্ক দায়িত্ব নেওয়ার পরে টুইটার ঋণের মধ্যে পড়েছে। তাঁর আচরণের কারণে অনেক বিজ্ঞাপনদাতা এই প্রতিষ্ঠানে ব্যয় কমিয়েছেন।
কর্মীদের বেশি সময় ধরে কাজ করার জন্য মাস্কের পাঠানো ই-মেইল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সারাহ কুনস্ট। কর্মীদের কাজের সময় বদলে দিয়ে একতরফাভাবে এ রকম একটি চুক্তি কি মাস্ক এভাবে করতে পারেন?