যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমানসহ আধুনিক সব যুদ্ধবিমান দিতে সহায়তা করবে তারা। এসব যুদ্ধবিমান চালানোর জন্য ইউক্রেনের বৈমানিকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাও করবে দেশটি।
হোয়াইট হাউসের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাপানে ধনী দেশগুলোর জোট জি-৭ সম্মেলনে উপস্থিত নেতাদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
জো বাইডেনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্ক। এফ-১৬ যুদ্ধবিমান চালানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেনের পাইলটদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক। দেশটির ৪০টি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান রয়েছে। এর মধ্যে সচল ৩০টি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বেশ কিছুদিন ধরেই যুদ্ধবিমান চাইছিলেন, তবে সাড়া মিলছিল না ঠিকঠাক। এবার জি-৭ সম্মেলন থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেল।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে পশ্চিমা বিশ্বের কাছ থেকে অস্ত্র ও প্রশিক্ষণ পাচ্ছে ইউক্রেন। এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সেই দেশটির উদ্যোগেই আবারও যুদ্ধবিমান পেতে যাচ্ছে ইউক্রেন।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের নির্মাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউক্রেনের বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী করতে এফ-১৬সহ চতুর্থ প্রজন্মে আধুনিক যুদ্ধবিমান দিতে এবং এসব বিমান চালানোর ক্ষেত্রে ইউক্রেনের বৈমানিকদের প্রশিক্ষণ দিতে আমাদের সহযোগী ও মিত্রদেশগুলোর যৌথ উদ্যোগে সমর্থন দেওয়া হবে।’
মার্কিন ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আসছে কয়েক মাসে এই প্রশিক্ষণ শুরু হবে। আমাদের সহযোগীরা (মিত্র ও সহযোগী দেশ) সিদ্ধান্ত নেবে, এসব যুদ্ধবিমান কখন দেওয়া, কতগুলো দেওয়া হবে এবং কোন কোন দেশ দেবে।’
এসব যুদ্ধবিমান পেলে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী যে শক্তিশালী হবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। ফলে জি-৭ সম্মেলনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি এ সিদ্ধান্তকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এক টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন, ইউক্রেনের আকাশপথে যুদ্ধের সক্ষমতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও ডেনমার্কের সঙ্গে কাজ করবে তাঁর দেশ।
তবে সমরবিদদের অনেকের মতে, শুধু এফ-১৬ যুদ্ধবিমান ইউক্রেনের জন্য আলাদা কোনো সুবিধা বয়ে আনবে না। নেদারল্যান্ডসভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান দ্য হেগ সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের গবেষণা পরিচালক টিম সুইজ। তিনি বলেন, ‘শুধু এসব বিমান যুদ্ধের মোড় বদলে দিতে পারবে না। সেনাসদস্য, ট্যাংক, হিমার্সের মতো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণব্যবস্থা এবং রাশিয়ার রাডার–ব্যবস্থা ফাঁকি দেওয়ার ব্যবস্থার সঙ্গে এফ-১৬ মাঠে নামানো হলে যুদ্ধে ইউক্রেনের পালে হাওয়া লাগতে পারে।’