যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক কর্মসূচির গোপন নথি নিজের ব্যক্তিগত বাসভবনের বাথরুমে রেখেছিলেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি বহু গোপন নথি ব্যক্তিগত জিম্মায় রাখার ঘটনায় ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের ৩৭টি অভিযোগ এনেছে দেশটির বিচার বিভাগ। স্থানীয় সময় শুক্রবার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের কাছে থাকা গোপন নথিতে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির বিস্তারিত, যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদেশগুলোর নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঘাটতির দিক এবং আক্রান্ত হলে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলার মাধ্যমে কীভাবে পাল্টা জবাব দেবে, সে পরিকল্পনার বিস্তারিত তথ্য রয়েছে। বলা হচ্ছে, গোপনীয় এসব নথি বেহাত হলে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে।
গোপন ওই সব নথি কীভাবে তদন্তকারী এবং নিজের আইনজীবীদের কাছেও লুকিয়ে রেখেছিলেন, তারও বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়েছে, কয়েকটি বাক্সে ভরে ওই সব নথি ফ্লোরিডার মার-এ-লাগো অবকাশযাপন কেন্দ্রের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে গিয়েছিলেন। পরে সেখান থেকে কিছু নথি উড়োজাহাজে করে নিউ জার্সি অঙ্গরাজ্যের বেডমিনস্টারে নিজ মালিকানাধীন গলফ ক্লাবে সরিয়ে নেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে দুই দফায় পারমাণবিক অস্ত্র–সম্পর্কিত গোপন নথি অন্যদের দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর মধ্যে প্রথম ঘটনাটি ছিল বেডমিনস্টারে ট্রাম্প ন্যাশনাল গলফ ক্লাবে। সেবার একজন লেখক, একজন প্রকাশক ও নিজের দুই কর্মীকে নিয়ে বৈঠকের সময় গোপন নথি প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এই ব্যক্তিদের কেউই নথিগুলো দেখার জন্য অনুমোদিত ছিলেন না।
রাষ্ট্রীয় গোপন নথিসংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার বিষয়টি ট্রাম্প নিজেও নিশ্চিত করেছেন। গত বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লিখেছেন, তাঁকে অভিযুক্ত করে মিয়ামির একটি ফেডারেল আদালতে হাজির হতে তাঁর নামে সমন জারি করা হয়েছে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন তিনি।
এ মামলায় আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে ট্রাম্পের ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে। এর আগে পর্ন তারকা স্টরমি ড্যানিয়েলকে ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ রাখার ঘটনায় গত মার্চে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত হন ট্রাম্প। এর মধ্য দিয়ে প্রথম কোনো সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পকে এ ধরনের অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়।