বিতর্কের শুরুতে করমর্দন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস
বিতর্কের শুরুতে করমর্দন করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস

করমর্দন থেকে কথার লড়াই—কমলা ও ট্রাম্পের বিতর্কের খুঁটিনাটি

ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিসের বিতর্কটা কয়েকটি বিষয়ে ‘প্রথম’ হয়ে রইল। এর একটি, আসছে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর এটাই প্রথম সরাসরি টেলিভিশন বিতর্ক।

যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের ফিলাডেলফিয়ায় স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার সকাল ৭টায়) সম্প্রচারমাধ্যম এবিসি নিউজের আয়োজনে এই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

বিতর্ক মঞ্চে উঠেই সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দিকে এগিয়ে গিয়ে হাত বাড়িয়ে দেন বর্তমান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা। দুজন করমর্দন করেন। বিবিসি বলছে, এই প্রথম তাঁরা মুখোমুখি হলেন, পরস্পরের সঙ্গে করমর্দন করলেন।

বেশ সাবলীলভাবে বিতর্ক এগিয়ে যাচ্ছিল। তবে কমলার একটি খোঁচায় পরিবেশ খানিকটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ট্রাম্পের নির্বাচনী সমাবেশ নিয়ে কমলা বলেন, সেখানে লোকেরা একঘেয়েমি ও ক্লান্তি থেকে তাড়াতাড়ি চলে যায়। এরপর ট্রাম্পও কমলার বিরুদ্ধে কণ্ঠ চড়ান।

সীমান্ত ও অভিবাসন নিয়ে কমলার বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন ট্রাম্প। অর্থনীতি ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়েও সরব হয়ে ওঠেন তিনি। বাইডেন প্রশাসনের অংশ হিসেবে তিনি (কমলা) কেন আরও বেশি নীতিগত লক্ষ্য অর্জন করেননি, সেসব নিয়েও প্রশ্ন করেন ট্রাম্প।

দেশজুড়ে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার কেড়ে নেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের দিকে আঙুল তোলেন কমলা। আরেক মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য ট্রাম্প আদৌ সক্ষম (ফিট) কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।

২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটল ভবনে হামলা এবং ‘দুর্বল ও ভুল জাতীয় নিরাপত্তানীতি, পররাষ্ট্রনীতির’ জন্যও বিতর্কে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কমলা তোপ দাগেন।

বিতর্কে ট্রাম্প বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একজন ‘অস্তিত্বহীন’ প্রেসিডেন্ট হিসেবে আখ্যা দেন। জবাবে কমলা বলেন, ‘নির্বাচনে আপনি বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়ছেন না, আপনি লড়ছেন আমার বিরুদ্ধে।’

বিতর্কের শেষ পর্যায়ে এসে ট্রাম্প বলেন, বাইডেন ও কমলা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এর আগে কমলা বলেন, ট্রাম্প খুব সহজেই বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ নেতাদের দিয়ে প্রভাবিত হন। তাঁকে (ট্রাম্প) নিয়ে বিশ্বনেতারা হাসাহাসি করেন।

বিতর্ক শেষ হওয়ার পরপরই ৩৪ বছর বয়সী মার্কিন গায়িকা টেলর সুইফট এবারের নির্বাচনে কমলাকে ভোট দেওয়ার ঘোষণা দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে সুইফট বলেন, তিনি কমলাকে ভোট দেবেন। কারণ, তিনি অধিকারের জন্য লড়াই করেন। আর তিনি (সুইফট) বিশ্বাস করেন, চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য একজন যোদ্ধার প্রয়োজন। তিনি মনে করেন, কমলা একজন প্রতিভাধর নেত্রী।

পোস্টের শেষে সুইফট নিজের নাম লিখে পরিচয় দেন ‘নিঃসন্তান ক্যাট লেডি’ হিসেবে। কিছু সময় পর এর জবাব দিয়ে এক্সে পোস্ট দেন মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও টেসলার সিইও ইলন মাস্ক। তিনি লিখেন, ‘ভালোই টেলর...তুমি জিতেছ...।’

দেড় ঘণ্টার বিতর্কে কমলা-ট্রাম্প কথার লড়াই চালান। যুক্তি উপস্থাপন, পাল্টাপাল্টি আক্রমণে একে অপরকে নাস্তানাবুদ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, বিতর্কে জিতলেন কে?

কয়েকজন বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজ বলছে, ‘আজ রাতে, কমলা জিতেছেন।’

অন্যদিকে ভোটারদের মতামতের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন পোস্ট বলেছে, গতকাল রাতের বিতর্কে এগিয়ে রয়েছেন কমলা।