যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যের শিকাগোর বাসিন্দা ভামার হান্টারের বাড়ির পাশেই ‘গিভ মি সাম সুগাহ’ নামের বেকারি। তাই সপ্তাহে অন্তত এক দিন নাশতা করতে বা মিষ্টিজাতীয় কিছু খেতে বেকারিতে যেতেন। তিনি কাউন্টারের পেছনে বসা নারীর সঙ্গে বেশ খোশগল্পে মেতে উঠতেন।
হান্টার বলেন, ‘বেকারির সেবা আমার বেশ পছন্দের ছিল। তাদের খাবারও আমি পছন্দ করতাম।’
৫০ বছর বয়সী হান্টার তখনো জানতেন না, এই বেকারির সঙ্গে মিশে আছে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় ঘটনা। ২০২২ সালের মার্চে একটি ফোন তাঁর জীবনের সবকিছু বদলে দিয়েছে।
বেকারির ফোন নম্বর আগে থেকেই মুঠোফোনে ছিল জানিয়ে হান্টার বলছিলেন, ‘আমি ফোনে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় বেকারি থেকে একটি কল এল। মনে প্রশ্ন জাগল, বেকারি থেকে কেন আমাকে কল দেওয়া হচ্ছে।’
কল দিয়েছেন বেকারির মালিক লিনোর লিন্ডসে। হান্টার বলেন, ‘কল ধরার পর তিনি বললেন, আপনি কি ভামার হান্টার। আমি বললাম, হ্যাঁ।’
হান্টার দীর্ঘদিন ধরে গর্ভধারিণী মায়ের ফোন কল পাওয়ার প্রত্যাশা করছিলেন। তিনিও তাঁকে খুঁজে পেতে নানা চেষ্টা করছিলেন।
একই সময় হান্টার ও লিন্ডসে দুজনেই কাকতালীয় এক অবিশ্বাস্য ঘটনা উপলব্ধি করলেন। ফোনে দুজনই চিৎকার করে উঠলেন।
লিন্ডসে বলেন, ‘আমি যখন জানলাম, হান্টার কে, আমরা ফোনকলে দুজনেই চিৎকার করছিলাম। অথচ আমরা দুজন কতই–না কাছাকাছি এলাকায় বসবাস করছি।’ হান্টার বলেন, ‘এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য।’
১৯৭৪ সালে লিন্ডসের গর্ভে হান্টারের জন্ম হয়। তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর। এখন লিন্ডসের বয়স ৬৭। তিনি বলেন, ‘সংসারে অভাব–অনটনের কারণে তখন হান্টারকে দত্তক দিতে হয়েছিল।’
সন্তানের জন্মের পর লিন্ডসে তার মুখ দেখতে পারেননি। কারণ, সন্তানকে দত্তক দেওয়া তাঁর জন্য খুবই কঠিন ছিল।
এরই মধ্যে লিন্ডসের একটি কন্যাসন্তান হয়। নাম রাখা হয় র্যাচেল। এই র্যাচেলের বয়স এখন ৪০। পাঁচ দশক পর এক জিনিয়ালোজিস্ট লিন্ডসেকে ফোন করে বলেন, তাঁকে তাঁর সন্তান খুঁজছে। তিনি ওই সন্তানের নম্বরও দিলেন। এভাবে তিনি হান্টারকে খুঁজে পেলেন।
হান্টার বলেন, ‘৩৫ বছর বয়স পর্যন্ত আমি জানতাম না, আমি দত্তক হিসেবে আরেক পরিবারে বেড়ে উঠেছি। তবে সেই পরিবারে আমার নিজেকে মাঝে মাঝে বাইরের কেউ মনে হতো।’