যুক্তরাষ্ট্রের পাঠানো ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হওয়া চীনা গোয়েন্দা বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ থেকে সেন্সর উদ্ধার করা হয়েছে। বেলুনটির ধ্বংসাবশেষে ইলেকট্রনিক ডিভাইসও ছিল। মার্কিন বাহিনীর পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর নর্দার্ন কমান্ডের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আটলান্টিক মহাসাগরের যেখানে চীনা গোয়েন্দা বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ পড়েছে, সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে সেন্সর ও ইলেকট্রিক ডিভাইসের টুকরাও রয়েছে।
এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এফবিআই এসব ধ্বংসাবশেষ পরীক্ষা করে দেখবে বলেও জানানো হয়েছে।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে একটি চীনা গোয়েন্দা বেলুন শনাক্ত হয়। এর কয়েক দিন আগে থেকেই সেটি মার্কিন সামরিক স্থাপনার ওপর দিয়ে উড়ছিল। পরদিন এফ-২২ যুদ্ধবিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে বেলুনটি ধ্বংস করে মার্কিন সামরিক বাহিনী। চীনা বেলুনটির ধ্বংসাবশেষ আটলান্টিক মহাসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের জলসীমায় পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা বেলুনের ধ্বংসাবশেষ চীনকে ফেরত দেবে না। জানানো হয়, বিশাল আকৃতির এই বেলুনে সৌর প্যানেল ছিল, অ্যানটেনা ছিল। মার্কিন প্রশাসনের অভিযোগ, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে উড়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছিল। ৪০টি দেশের ওপর দিয়ে উড়ে এসেছিল বেলুনটি।
পরবর্তী সময় যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি দক্ষিণ আমেরিকার আকাশেও শনাক্ত হয় চীনা গোয়েন্দা বেলুন।
অন্যদিকে চীনের দাবি, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণের জন্য বেলুনটি আকাশে ওড়ানো হয়েছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট পথে না গিয়ে সেটি ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের আকাশসীমায় অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে বেলুনটি চলে যাওয়ার ঘটনার জন্য বেইজিং অনুতপ্ত।
বেলুনটি ধ্বংস করায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানায় বেইজিং। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র মাত্রাতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।
তবে বেলুনকাণ্ডে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন তাঁর চীন সফর স্থগিত করেন। ব্লিঙ্কেন বলেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী কাজ।
এদিকে চীনা গোয়েন্দা বেলুন নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার আকাশে একের পর এক ‘রহস্যময় বস্তু’ শনাক্ত হয়েছে। পরে যুদ্ধবিমান পাঠিয়ে সেগুলো ভূপাতিত করেছে মার্কিন বাহিনী। দেশ দুটির সরকার এখনো নিশ্চিত করে বলতে পারছে না, এসব বস্তু আসলে কী।