মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বেশি বয়সকে (৮১) নির্বাচনী প্রচারের প্রধান বিষয়বস্তু করেছেন তাঁর চেয়ে তিন বছরের ছোট সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আজ ১৪ জুন শুক্রবার ট্রাম্প তাঁর ৭৮তম জন্মদিন উদ্যাপন করছেন। এর আগে নিজেকে বাইডেনের চেয়ে শক্তিশালী বিকল্প হিসেবে তুলে ধরতে ট্রাম্প অনেক সময় তাঁকে বেসামাল বলে মন্তব্য করেছেন।
ট্রাম্পের প্রচারশিবির থেকে প্রায় প্রতিদিন বাইডেনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হোঁচট খাওয়া বা কথা বলার সময় ভুলে যাওয়ার মতো নানা বিষয় নিয়ে ভিডিও প্রকাশ করা হয়ে থাকে। তাদের দাবি, বাইডেন যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে কার্যকর নন, এসব ভিডিও তারই প্রমাণ। তবে, ট্রাম্প শিবিরের এসব ভিডিওর বেশির ভাগ সম্পাদনা করা ও বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল থাকে না।
ট্রাম্পের প্রচার শিবির থেকে বাইডেনের বয়স নিয়ে খোঁচা দেওয়া হলেও অনেকেই ভুলে যান, বাইডেনের চেয়ে মাত্র সাড়ে তিন বছরের ছোট ট্রাম্প। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ফ্লোরিডায় ট্রাম্প তাঁর জন্মদিন জমকালো আয়োজনে উদযাপন করেন। তাঁর পাঠানো আমন্ত্রণপত্রে লেখা হয়, ‘আমেরিকার এ যাবৎকালের শ্রেষ্ঠ প্রেসিডেন্টের জন্মদিন উদ্যাপনে আমাদের সঙ্গে যোগ দিন। আয়োজনে অতিথিদের মার্কিন পতাকার আদলে পোশাক পরে আসতে বলা হয়।
ট্রাম্পের বয়স নিয়ে তাই ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছ। বাইডেন শিবির থেকেও তাঁর বয়স নিয়ে কথা উঠছে।
জো বাইডেনের চলাফেরার ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা প্রসঙ্গে আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকারবিষয়ক প্রভাষক ম্যাথু ফস্টার বলেন, শারীরিক সক্ষমতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছু পার্থক্য চোখে পড়ে। কারণ, বাইডেনের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতে হয়। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে কাজের সময়ের ধরাবাঁধা নিয়ম নেই। তিনি জনসমক্ষে বেশি থাকেন। তিনি যখন সমর্থকদের সামনে ভাষণ দেন তখন দীর্ঘক্ষণ, অসংলগ্ন অনেক আবেগনির্ভর কথাবার্তা বলেন।
গত রোববার লাস ভেগাসের এক নির্বাচনী অনুষ্ঠানে ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করেন। তা নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে হাসাহাসি চলছে। এ ছাড়া ট্রাম্প সম্প্রতি তুরস্ক ও হাঙ্গেরির নেতাদের চিনতে গুলিয়ে ফেলেছিলেন। বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে ভুলভাল মন্তব্য করেছেন। এ ছাড়া বাইডেনকে যে শারীরিক পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হয়, ফাস্ট ফুড লাভার ট্রাম্প অনেক দিন এ ধরনের কোনো পরীক্ষা দেননি।
আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প বা বাইডেন যিনিই নির্বাচিত হন না কেন, তিনি সবচেয়ে বয়স্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হবেন; কিন্তু বয়সের এই ব্যাপারটি কি ভোটাররা গুরুত্ব দেন? ফস্টার অবশ্য তা মনে করেন না। তাঁর মতে, মার্কিন নাগরিকেরা বয়সের চেয়ে অর্থনীতি, অভিবাসন, গর্ভপাতের মতো বিষয়গুলোর নীতির বিষয়ে চিন্তা করে ভোট দেবেন।