শেষ মুহূর্তে ভোটারদের কাছে কমলা বার্তা দিচ্ছেন, যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য ট্রাম্প হুমকি।
‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির ওপর জোর দিয়ে আগ্রাসী বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের।
সময় ফুরিয়ে আসছে। একই সঙ্গে বাড়ছে ব্যস্ততা। গত তিন মাস কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প ভোটারদের কাছে ছুটে বেড়িয়েছেন। এখন শেষটাও ভালো করতে চাইছেন তাঁরা। প্রচারের শেষ দুই দিনে নিজেদের সবটুকু শক্তি নিংড়ে দিয়ে এখনো সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের আস্থা অর্জন করতে চাইছেন।
আধুনিক কালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারে এমন তীব্র প্রতিযোগিতা আগে আর কখনো চোখে পড়েনি। ৫ নভেম্বরের নির্বাচনের আগে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্যে ছুটে বেড়াচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হলে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস হবেন দেশটির প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। হোয়াইট হাউসের যাওয়ার লড়াইয়ে তিনি শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারে সমাবেশ করছেন জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা ও মিশিগানে। শেষ মুহূর্তে ভোটারদের কাছে তিনি বার্তা দিচ্ছেন যে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের জন্য ট্রাম্প হুমকি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে এবার আর পা হড়কাতে চান না ট্রাম্প। ২০১৬ সালে নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট হলেও ২০২০ সালের নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনের কাছে হেরেছিলেন। কিন্তু হোয়াইট হাউসে ফেরার লড়াইয়ে তাঁকে অনেক বাধা পেরোতে হচ্ছে। ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত কোনো প্রার্থী হিসেবে তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে তিনি উগ্র ডানপন্থার সরকার হিসেবে ঝুঁকে পড়ার ও ‘আমেরিকা প্রথম’ নীতির ওপর জোর দিয়ে আগ্রাসী বাণিজ্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কমলার নির্বাচনী সমাবেশ থেকে কয়েক মাইল দূরত্বে এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে বয়স্ক প্রার্থী হিসেবে ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প গত শুক্রবার মিলওয়াকি ও উইসকনসিনে সমাবেশ করেছেন। এর বাইরে নর্থ ক্যারোলাইনা, ভার্জিনিয়া, পেনসিলভানিয়া ও জর্জিয়ায় সমাবেশ করবেন তিনি। এসব স্থানে আবার কমলার পথ মাড়াতে হবে তাঁকে।
কমলা ও ট্রাম্পের এই ব্যস্ত নির্বাচনী প্রচার সোমবার রাত পর্যন্ত চলবে। তাঁদের এসব সমাবেশ গভীর রাত পর্যন্ত চলবে। এর মধ্যে মিশিগানের গ্র্যান্ড র্যাপিডসে সমাবেশ করবেন ট্রাম্প। অন্যদিকে পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় সমাবেশ করবেন কমলা।
মঙ্গলবার ভোটের দিন হলেও যুক্তরাষ্ট্রের ভোটাররা ব্যাপক হারে আগাম ভোট দিচ্ছেন। এর মধ্যে সাত কোটি আগাম ভোট দেওয়া হয়ে গেছে। এর মধ্যে জর্জিয়াতেই ৪০ লাখের বেশি ভোটের রেকর্ড হয়েছে।
নির্বাচন ঘিরে জরিপগুলোয় এখনো হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের কথা বলা হচ্ছে। এর মধ্যে দোদুল্যমান সাতটি অঙ্গরাজ্য রয়েছে। এসব অঙ্গরাজ্যের ভোটই এবার ফল নির্ধারণ করবে। এ কারণেই ট্রাম্প ও তাঁর ৬০ বছর বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বী কমলা হ্যারিসকে কঠিন লড়াই করতে হচ্ছে এখানে।
কমলা হ্যারিস মূলত মধ্যপন্থী ভোটার ও তাঁর দল ডেমোক্র্যাট–সমর্থকদের কাছে ছুটে যাচ্ছেন। তাঁদের কাছে ট্রাম্পকে বিষাক্ত কর্তৃত্ববাদী হিসেবে তুলে ধরে তাঁর অধ্যায় শেষ করতে আহ্বান জানাচ্ছেন।
উইসকনসিনে ভোটারদের কাছে কমলা বলেন, ট্রাম্প অনিয়ন্ত্রিত ক্ষমতাশালী হয়ে উঠতে নির্বাচন করছেন।
অন্যদিকে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে কমলাকে ব্যাপক আক্রমণ করে মন্তব্য করা হচ্ছে। মূলত ট্রাম্প তাঁর অনুগত ভক্ত ও ভোটারদের ব্যাপক হারে উপস্থিত হয়ে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।
মিশিগানে গত শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কমলার সমাপনী বার্তা হলো সে তোমাদের ঘৃণা করে।’ ট্রাম্প আরও বলেন, কমলার নির্বাচিত হলে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হবে। কমলাকে যুদ্ধবাজ হিসেবেও উল্লেখ করেন তিনি।