যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ব্রুকলিন জাদুঘরের আংশিক দখল করে নিয়েছেন ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীরা। পরে এটির প্রধান প্রবেশপথে ফিলিস্তিনের ব্যানার টানিয়ে দেন তাঁরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভকারীরা জাদুঘরটির অধিকাংশ লবি দখল করে নেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতি হয়।
ওই ঘটনায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে নিউইয়র্ক পুলিশ বিভাগের মুখপাত্র তাঁদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করেননি।
ব্রুকলিন আর্ট জাদুঘর কর্তৃপক্ষ বলেছে, বিশৃঙ্খলার কারণে এক ঘণ্টা আগেই জাদুঘরটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঘটনাস্থল থেকে রয়টার্সের একজন সংবাদদাতা জানান, যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের একজন জাদুঘরের বহিরাঙ্গনে থাকা ভাস্কর্যে স্প্রে-পেইন্ট করেন। ভবনের ভেতর ও বাইরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে পুলিশের।
জাদুঘরের আংশিক দখলে নেওয়ার পর এটির প্রধান প্রবেশপথে ব্যানার টানিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তাতে লেখা ছিল, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো, গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকো।’
জাদুঘরের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের প্লাজায় থাকা নতুন ও পুরোনো শিল্পকর্মের ক্ষতি হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ভবনের ভেতরে ঢুকেছেন। আমাদের নিরাপত্তাকর্মীদের শারীরিক ও মানসিকভাবে হয়রানি করেছেন তাঁরা।’
এদিকে ব্রুকলিন মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, ভবন, শিল্পকর্ম ও কর্মীদের নিরাপত্তায় জাদুঘর এক ঘণ্টা আগেই বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিক্ষোভকারীদের শান্তিপূর্ণভাবে ভবনটি ছেড়ে যেতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, গতকাল শত শত বিক্ষোভকারী ব্রুকলিনে মিছিল করছিলেন। একপর্যায়ে তাঁদের কেউ কেউ জাদুঘরে ঢুকে পড়েন। এ সময় নিরাপত্তাকর্মীরা অনেককে বাধা দেন।
জাদুঘরের আংশিক দখলে নেওয়ার পর এটির প্রধান প্রবেশপথে ব্যানার টানিয়ে দেন বিক্ষোভকারীরা। তাতে লেখা ছিল, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো, গণহত্যা থেকে বিচ্ছিন্ন থাকো।’
‘উইদিন আওয়ার লাইফটাইম’ নামের ফিলিস্তিনপন্থী একটি সংগঠন বিক্ষোভকারীদের ‘গাজার জন্য ব্রুকলিন জাদুঘর দখল’ করার আহ্বান জানায়। সংগঠনটি বলেছে, ইসরায়েলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যেকোনো ধরনের বিনিয়োগ ও এমন অর্থায়ন থেকে কর্তৃপক্ষকে বিচ্ছিন্ন রাখতে বাধ্য করতেই জাদুঘরটি দখল করেন তাঁদের কর্মীরা।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ চলছে; বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোয়। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল ব্রুকলিনে ওই বিক্ষোভ হয়।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার হামলায় ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাঁদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।
এদিকে জাতিসংঘ বলেছে, গাজার বিভিন্ন অংশে দুর্ভিক্ষ শুরু হওয়ায় এ উপত্যকায় ১০ লাখের বেশি মানুষ এখন ক্ষুধার ‘বিপর্যয়কর’ পরিস্থিতির সম্মুখীন।