যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন ৫ নভেম্বর। কিন্তু তার আগেই আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়েছে। ৪০টির মতো অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোট গ্রহণ চলছে। ইতিমধ্যে কমপক্ষে ৩ কোটি ২০ লাখ মানুষ এ সুযোগ গ্রহণ করেছে।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যে স্থানীয় সময় গত শনিবার (২৬ অক্টোবর) ছিল আগাম ভোটের প্রথম দিন। প্রথম দিনেই ১ কোটি ৪০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন, যা একটি রেকর্ড।
রোববার কুইন্সে আগাম ভোটে দিতে এসে প্রথম আলোর এই প্রতিনিধি বেশ উল্লেখযোগ্যসংখ্যক ভোটারের উপস্থিতি লক্ষ করেন। বাংলা ভাষার ব্যবহারও ছিল বেশ লক্ষণীয়।
ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকশন ল্যাবের তথ্যের ভিত্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, আগাম ভোট দেওয়া মানুষদের কেউ সশরীর ভোট দিয়েছেন, আবার কেউ ব্যালটে ভোট দিয়ে তা ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের অঙ্গরাজ্য হিসেবে পরিচিত নর্থ ক্যারোলাইনা, জর্জিয়াসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে গত সপ্তাহে আগাম ভোট গ্রহণ শুরু হয়। প্রথম দিনেই এসব অঙ্গরাজ্যে রেকর্ডসংখ্যক ভোট পড়তে দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটিতে নিজস্ব ভোটিং পদ্ধতি রয়েছে। পোস্টের মাধ্যমে বা সশরীর গিয়ে আগাম ভোট, নির্বাচনের দিন ভোট বা এ তিনটি উপায়ে সমন্বিত ভোট সব ধরনের পদ্ধতিই রয়েছে অঙ্গরাজ্যগুলোয়। যুক্তরাষ্ট্রের অনেক পরিবারের যত দ্রুত সম্ভব ভোট দিয়ে ফেলা পারিবারিক ঐতিহ্য বলেও বিবেচিত হয়।
গত তিন মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ঘিরে নাটকীয় নানা ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাচনী লড়াই থেকে সরে গিয়ে কমলা হ্যারিসকে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেওয়ার ঘটনাটি সবার নজর কাড়ে। এ ছাড়া দুবার ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া টেলিভিশন বিতর্ক ঘিরেও দুই প্রচারশিবিরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এসব ঘটনা মার্কিন নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে এবার ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এর বাইরে কমলা ও ট্রাম্পের নীতি ও কর্মকাণ্ড মাথায় রেখে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা।
যুক্তরাষ্ট্রে আগাম ভোট ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রতি সাতজন ভোটারের একজন আগাম ভোট দিয়েছিলেন।
যদিও ওই বছর রিপাবলিকানদের অনেকে নাটকীয়ভাবে মেইলে ভোট দেওয়ার পরিসর বাড়ানোর বিরোধিতা করেছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, এটি সরাসরি ভোটের চেয়ে কম নিরাপদ। ওই বছর জো বাইডেনের কাছে নির্বাচনে হেরে মেইলে ভোট জালিয়াতির মিথ্যা অভিযোগ তুলেছিলেন ট্রাম্প।
অনেক রিপাবলিকান বারবার জোর দিয়ে বলছেন যে নির্বাচনের দিন ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হয়েই ভোট দেওয়া উচিত। যদিও দলের কর্মকর্তারা সমর্থকদের আগে ভোট দেওয়ার জন্য উৎসাহ দিচ্ছেন।