যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পর দেশটির বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ। শিকাগো (বাঁয়ে) ও ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভের ছবি দুটি এক্স থেকে নেওয়া।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার পর দেশটির বিভিন্ন শহরে শুরু হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভ। শিকাগো (বাঁয়ে) ও ফিলাডেলফিয়ায় বিক্ষোভের ছবি দুটি এক্স থেকে নেওয়া।

যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে হাজারো মানুষ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ায় হতাশা জানিয়ে গতকাল শনিবার দেশটির বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছেন হাজারো মানুষ।

নারীদের প্রজনন অধিকার নিয়ে হুমকি তৈরি হওয়া ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই যুক্তরাষ্ট্র থেকে গণহারে অভিবাসীদের বের করে দেওয়ার ডোনাল্ড ট্রাম্পের অঙ্গীকারের প্রেক্ষাপটে এ বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভে অংশ নিতে নিউইয়র্ক ও সিয়াটলসহ অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে আসেন শত শত মানুষ।

গত শুক্রবারও ওরেগনের পোর্টল্যান্ড শহরে ট্রাম্পবিরোধী একই রকমের বিক্ষোভ হয়েছে। এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কারও হাতে ছিল ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো’, ‘ভয়কে শক্তিতে পরিণত করো’ এমন নানা স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড।

নিউইয়র্কে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীদের মধ্যে ছিলেন বিভিন্ন পরামর্শক গ্রুপের কর্মীরাও। তাঁরা কর্মীদের অধিকার ও অভিবাসীদের বিষয়ে ন্যায়বিচারের আশ্রয় নেওয়ার দাবি জানান।

ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল অ্যান্ড টাওয়ারের সামনে এ সময় বিক্ষোভকারীদের হাতে ছিল, ‘আমরা আমাদের রক্ষা করি’, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, নারীরা তাঁদের স্বাধীনতার জন্য আর কত দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করবেন’, ‘আমরা পিছু হটব না’—এমন নানা স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড। কাউকে কাউকে স্লোগান দিতে শোনা যায়, ‘আমরা এখানে আছি এবং আমরা চলে যাচ্ছি না।’

বিক্ষোভ হয়েছে ওয়াশিংটন ডিসিতেও। সেখানে হেরিটেজ ফাউন্ডেশনের বাইরে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন সংগঠন ‘উইমেন্স মার্চ’–এর কর্মীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বিক্ষোভ নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীদের হাতে বিভিন্ন স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড। এর কোনোটিতে লেখা, ‘ভালো আচরণের নারীরা ইতিহাস তৈরি করেন না’, ‘আপনারা কখনোই নিঃসঙ্গ নন’, ‘যেখানে আমার পছন্দের অধিকার নেই, সেখানে কোথায় আমার স্বাধীনতা’ ইত্যাদি। এ ছাড়া বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেন, ‘আমাদের বিশ্বাস, আমরা জিতব!’

বিক্ষোভকারীরা সমবেত হন সিয়াটলের স্পেস নিডলের বাইরেও। সেখানে প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘ট্রাম্প ও দুই দলের যুদ্ধংদেহী মনোভাবের বিরুদ্ধে পদযাত্রা ও বিক্ষোভ’। কিছু প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল, ‘গণ–আন্দোলন গড়ে তুলুন এবং যুদ্ধ, নিপীড়ন ও গণহত্যার বিরুদ্ধে লড়াই করুন’।

ডোনাল্ড ট্রাম্প

সিয়াটলে বিক্ষোভকারীদের কারও কারও শরীরে ছিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে, এমন পোশাক।

আগের দিন গত শুক্রবারও ওরেগনের পোর্টল্যান্ড শহরে ট্রাম্পবিরোধী একই রকমের বিক্ষোভ হয়েছে। এই বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী ব্যক্তিদের কারও হাতে ছিল ‘ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করো’, ‘ভয়কে শক্তিতে পরিণত করো’ এমন নানা স্লোগান–সংবলিত প্ল্যাকার্ড।

নির্বাচনে ট্রাম্প জেতায় শুক্রবার পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গেও বিক্ষোভ করেন অনেকে। পয়েন্ট স্টার্ট পার্কে সমবেত হন তাঁরা। ‘আমরা পিছু হটছি না’ ও ‘আমার শরীর, আমার পছন্দ’—তাঁরা এমন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন।

বিক্ষোভের আয়োজকদের একজন স্টিভ ক্যাপরি। ডব্লিউপিএক্সআই টিভিকে তিনি বলেন, ‘সামনে যা ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। কিন্তু আমরা পিছু হটছি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘ট্রাম্প আমাদের সবার জন্যই হুমকি। তাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, আমাদের সংগঠিত হতে হবে।’