ইউক্রেনকে গুচ্ছবোমা দেওয়া নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাজ্য সফর করছেন। চলতি সপ্তাহে লিথুনিয়ায় ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আগে এ সফর করছেন তিনি।
গতকাল রোববার যুক্তরাজ্যে পৌঁছান বাইডেন। আজ সোমবার ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এ দুই নেতা ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউক্রেনের নিষিদ্ধ গুচ্ছবোমা দেওয়া নিয়ে উদ্বেগ জানানো দেশগুলোর তালিকায় যুক্তরাজ্য ও কানাডাও আছে। এ বোমাগুলো সাধারণ মানুষদের জন্য খুব বিপজ্জনক হওয়ায় এগুলো ব্যাপকভাবে নিষিদ্ধ। যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি মিত্রদেশ ইতিমধ্যে গুচ্ছবোমা দেওয়ার ব্যাপারে প্রশ্ন তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইউক্রেনের অস্ত্রের মজুত কমে যাচ্ছে, এ জন্য তাদের গুচ্ছবোমা দেওয়া প্রয়োজন।
ইউক্রেনকে গুচ্ছবোমা দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে এখন পর্যন্ত সরাসরি বাইডেনের সমালোচনা করেননি সুনাক। তবে গত শনিবার তিনি বলেছেন, কনভেনশন অন ক্লাস্টার মিউনিশনস চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী ১২৩টি দেশের একটি যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক এ চুক্তির আওতায় গুচ্ছবোমার উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ।
গতকাল ন্যাটোর সদস্যদেশ নিউজিল্যান্ড বলেছে, এ ধরনের বোমা ব্যবহার করা হলে সাধারণ মানুষেরা বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়বে।
গুচ্ছবোমা থেকে একসঙ্গে অনেক ছোট ছোট বোমা ছোড়া হয় বলে এতে বিস্তৃত এলাকাজুড়ে নির্বিচারে মানুষ নিহত হয়। এ ছাড়া বোমাগুলো অবিস্ফোরিত অবস্থাতেও মাটিতে বছরের পর বছর পড়ে থাকতে পারে, যা মানুষের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, ইউক্রেন এ অস্ত্রগুলো রাশিয়ায় কিংবা জনবসতির এলাকায় ব্যবহার করবে না বলে লিখিত নিশ্চয়তা দিয়েছে।
যুক্তরাজ্য সফরে বাইডেন রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গেও দেখা করবেন। রাজা হিসেবে চার্লসের অভিষেক হওয়ার পর এটি তাদের প্রথম বৈঠক।
কাল মঙ্গলবার ও আগামী বুধবার ভিলনিয়াসে ৩১ সদস্যবিশিষ্ট পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
গত এপ্রিলে ন্যাটোতে যোগ দিয়েছে ফিনল্যান্ড। এবারই প্রথম ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে যাচ্ছে দেশটি। ন্যাটোতে সুইডেনেরও যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তুরস্কের আপত্তির মুখে তা সম্ভব হয়নি। তুরস্কের অভিযোগ, সুইডেন সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে।
এ নিয়ে তুরস্কের সঙ্গে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য বাইডেন সুনাকের সহযোগিতা চাইতে পারেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গত শুক্রবার জানানো হয়, তারা ইউক্রেনকে গুচ্ছবোমা দেবে। তবে অন্য দেশের ভূখণ্ডে এ বোমা ব্যবহার করতে পারবে না কিয়েভ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে গুচ্ছবোমা দেওয়াকে ‘খুবই কঠিন সিদ্ধান্ত’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি মিত্রদেশগুলোর সঙ্গে কথা বলেছেন।
বাইডেন প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাজ্য, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও স্পেন জানিয়েছে, তারা গুচ্ছবোমা ব্যবহারের পক্ষে নয়। যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালও।