যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ভাতিজা ফ্রেড ট্রাম্প তৃতীয়
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর ভাতিজা ফ্রেড ট্রাম্প তৃতীয়

কমলা হ্যারিসকে কেন ভোট দিতে চান ট্রাম্পের ভাতিজা

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন ‘বদ্ধ উন্মাদ’। কয়েক দশক আগে তাঁকে বর্ণবাদী কথাবার্তা বলতে শুনেছেন। এসব কারণে আসছে নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না। এর পরিবর্তে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন তিনি। এসব কথা ট্রাম্পের নিজের ভাতিজা ফ্রেড ট্রাম্প তৃতীয়ের।

ফ্রেড ট্রাম্প একটি বই লিখেছেন। নাম ‘অল ইন দ্য ফ্যামিলি: দ্য ট্রাম্পস অ্যান্ড হাউ উই গট দিস ওয়ে’। বইটির প্রচারের অংশ হিসেবে সাক্ষাতকারে ফ্রেড বলেন, ‘আমার চাচা ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বদ্ধ উন্মাদ।’

এবিসি নিউজের অ্যারন কাটেরস্কিকে সম্প্রতি একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন ফ্রেড ট্রাম্প। সাক্ষাতকারে চাচা ও নভেম্বরের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্পর্কে বেশ খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। ফ্রেড বলেন, ট্রাম্পের চলার পথটা ‘জটিল ও অনেক সময় বেশ নিষ্ঠুর’।

ফ্রেড ট্রাম্প একটি বই লিখেছেন। নাম ‘অল ইন দ্য ফ্যামিলি: দ্য ট্রাম্পস অ্যান্ড হাউ উই গট দিস ওয়ে’। বইটির প্রচারের অংশ হিসেবে সাক্ষাতকারে ফ্রেড বলেন, ‘আমার চাচা ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বদ্ধ উন্মাদ।’

ফ্রেড বলেন, ‘তিনি (ডোনাল্ড ট্রাম্প) আমার সঙ্গে ভয়ানক কাজ করেছেন। কিছু মানুষ বলেন, “এত কিছুর পরও আপনি কীভাবে তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চান?” কিন্তু তিনি আমার চাচা। এর অর্থ অনেক বড়।’

আমার মনে হয়, তিনি (ট্রাম্প) মানুষকে ব্যবহার করেন। সেটা ওই ব্যক্তি কালো হোন কিংবা সাদা এবং ভোটের জন্য তিনি এটা করেন।
ফ্রেড ট্রাম্প, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাতিজা

ট্রাম্পের বড় ভাই ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়রের ছেলে ফ্রেড ট্রাম্প তৃতীয়। ১৯৮১ সালে ট্রাম্পের ভাই ফ্রেড জুনিয়র মাত্র ৪২ বছর বয়সে মারা যান।  

ফ্রেড ট্রাম্পের নতুন বইয়ে ‘দি রেস কার্ড’ নামে একটি অধ্যায় আছে। এ অধ্যায়ে নিজ চাচার ‘বর্ণবাদী কথাবার্তা’ নিয়ে লিখেছেন ফ্রেড।

এ বিষয়ে ফ্রেড ট্রাম্প বলেন, ‘তখন আমার বয়স ১০। আমি আমার দাদা–দাদির বাসায় ছিলাম। আমি চাচার চিৎকার শুনে গাড়ি রাখার জায়গায় যাই। সেখানে তিনি (ডোনাল্ড ট্রাম্প) তাঁর সাদা রংয়ের গাড়ি ও সেটার কালো ছাদ নিয়ে চরম বর্ণবাদী কথা বলেছিলেন। গাড়িটিতে দাগ পড়ে যাওয়ায় তিনি ভীষণ রেগে পরপর দুবার বর্ণবাদী কথা বলেন। আমার এখনো সেটা মনে আছে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে তাঁর ভাতিজার দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চিউং। তিনি বলেন, ‘এসব দাবির পুরোটা নির্জলা মিথ্যা ও সম্পূর্ণ বানোয়াট। যাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চেনেন, তাঁরা জানেন, তিনি কখনোই এমন ভাষা ব্যবহার করেন না।’

ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অনেকেই বর্ণবাদী ব্যক্তি বলেন। আবার অনেকেই এমনটা বলতে নারাজ। আপনি চাচা ট্রাম্প সম্পর্কে কী ভাবেন?—এমন প্রশ্নের জবাবে ফ্রেড বলেন, ‘আমার মনে হয় না, তিনি একজন বর্ণবাদী ব্যক্তি।’ এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ট্রাম্পের ভাতিজা বলেন, ‘আমার মনে হয়, তিনি মানুষকে ব্যবহার করেন। সেটা ওই ব্যক্তি কালো হোন কিংবা সাদা এবং ভোটের জন্য তিনি এটা করেন।’

ফ্রেড আরও বলেন, ‘আমি তাঁকে বদলাতে পারব না। আমার মনে হয়, কেউই তাঁকে বদলাতে পারবেন না।’

এ সময় ফ্রেড ট্রাম্প তাঁর চাচা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ভোট না দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান। বলেন, তিনি বরং কমলা হ্যারিসকে ভোট দিতে চান। তবে ট্রাম্প যদি শেষ অবধি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে তিনি ট্রাম্পের অভিষেক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। অবশ্য যদি তাঁকে দাওয়াত দেওয়া হয়, তবেই।

এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে তাঁর ভাতিজার এসব দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারশিবিরের যোগাযোগ পরিচালক স্টিভেন চিউং। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘এসব দাবির পুরোটা নির্জলা মিথ্যা ও সম্পূর্ণ বানোয়াট। যাঁরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে চেনেন, তাঁরা জানেন, তিনি কখনোই এমন ভাষা ব্যবহার করেন না। আর এমন মিথ্যা গল্পের মুখোশ ক্রমেই উন্মোচন করা হয়েছে।