সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে প্রথম দিন থেকেই অভিবাসী তাড়ানোর হুমকি ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠছেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। তাঁর প্রচারশিবির মনে করছে, কমলাই হতে যাচ্ছেন পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় প্রচারণা চালাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে সাম্প্রতিক জরিপগুলোর পূর্বাভাস দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পও। কমলাকে লক্ষ্য করে আক্রমণের ধার বাড়িয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের এবারকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অভিবাসীদের জন্য আতঙ্কের হয়ে উঠেছে। রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসনবিরোধী কড়া বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে গত রোববার নির্বাচনী সমাবেশ করেছেন রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ট্রাম্প। সেখানে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পর প্রথম দিন থেকেই তিনি অভিবাসী বিতাড়নে কাজ শুরু করবেন এবং ‘অভিবাসী আক্রমণের’ ধারা উল্টে দেবেন।

সমাবেশে ট্রাম্প ও তাঁর মিত্ররা প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ক্রমাগত আক্রমণ করেছেন। তবে ডেমোক্র্যাট প্রচারশিবির ট্রাম্প ও তাঁর মিত্রদের এই অশ্রাব্য আক্রমণকেই হাতিয়ার বানিয়ে কাজে লাগাতে চাইছে।

আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে বিভিন্ন জরিপে কমলা ও ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনে মাত্র এক সপ্তাহ আগে ২০ হাজার আসনের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনের মঞ্চকে সমাপনী বক্তব্যের স্থান করে ফেললেন ট্রাম্প।

কমলাকে আক্রমণ করে ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমাদের দেশটাকে ধ্বংস করেছেন। আমরা আর এটা মেনে নেব না, কমলা।’

ডেমোক্র্যাট দুর্গ হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্কে লাতিন ভোটারদের আক্রমণ করেও বক্তব্য দেন ট্রাম্পের মিত্ররা। সমাবেশে ট্রাম্প বক্তব্য দেওয়ার আগে প্রায় ৩০ জন বক্তব্য দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন তাঁর রানিংমেট জে ডি ভ্যান্স, হাউস স্পিকার মাইক জনসন ও নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র রুডি জুলিয়ানি।

উত্তর ফিলাডেলফিয়ায় গত রোববার উচ্ছ্বসিত সমর্থকদের উদ্দেশে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন কমলা। তিনি বলেন, ‘আমাদের জীবনের সবচেয়ে ফলপ্রসূ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। আমরা জানি, শেষ পর্যন্ত কঠিন প্রতিযোগিতা হতে চলেছে। কোনো ভুল করা চলবে না। আমরা জিতবই।’

প্রতিটি নির্বাচনী সমাবেশে দেওয়া বার্তার প্রতিধ্বনি তুলে কমলা বলেন, ‘জাতির জন্য দুটি অত্যন্ত ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে একটিকে পছন্দ হিসেবে গ্রহণের নির্বাচন এটি।’

কমলার পক্ষ থেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে স্বার্থপর নির্বাচনী প্রচারের অভিযোগ তোলা হয়। কমলা বলেন, তাঁর নিজের প্রচারশিবির থেকে পুরো আমেরিকানদের জন্য একটি ভালো ভবিষ্যতের কাজ করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের সমাবেশে শুরুতে তাঁর মিত্ররা বেশ কিছু অশ্লীল ও বর্ণবাদী মন্তব্য করেন। বক্তব্যের শুরুতে ট্রাম্প সমবেত জনতার উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ‘চার বছর আগের চেয়ে কি এখন আপনারা ভালো আছেন?’ এ সময় জনতা সমস্বরে বলে ওঠেন, ‘না।’

৫ নভেম্বরের ভোটে জয়ী হলে অপরাধীদের হামলা থেমে যাবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিস খুবই কম আইকিউর মানুষ (বুদ্ধির সূচক)।’

দুই জরিপে এগিয়ে কমলা

ফোর্বসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুটি নতুন জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন কমলা। তবে অধিকাংশ জরিপে দুজনের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।

গত রোববার এবিসি নিউজ ও ইপসোসের করা জরিপে দেখা গেছে ট্রাম্পের চেয়ে চার পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। কমলার পক্ষে সমর্থন ৫১ শতাংশ আর ট্রাম্পের ৪৭ শতাংশ। গত আগস্টের তুলনায় কমলার সমর্থন ১ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে সিবিএস নিউজ ও ইউগভের করা জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে ১ পয়েন্টে এগিয়ে কমলা। এ জরিপে কমলার সমর্থন ৫০ শতাংশ আর ট্রাম্পের ৪৯ শতাংশ।

গত শনিবার ইমারসন কলেজের আরেক জরিপে দেখা যায়, দুই প্রার্থীর সমান ৪৯ শতাংশ সমর্থন রয়েছে। গত শুক্রবার টাইমস ও সিনেয়া কলেজের জরিপেও দুই প্রার্থী ৪৮ শতাংশ সমর্থন নিয়ে সমান অবস্থানে ছিলেন।