যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ক্যাপিটল ভবনে হামলার ঘটনায় অবশেষে আইনের আওতায় আসছেন দেশটির সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ওই হামলার ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে কমপক্ষে তিনটি অভিযোগ আনার বিষয়ে দেশটির বিচার বিভাগকে সুপারিশ করতে যাচ্ছে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের হাউস সিলেক্ট কমিটি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয় ২০২০ সালের ৩ নভেম্বর। এর ৬৪ দিন পর জানুয়ারি কংগ্রেসের যৌথসভা বসেছিল ইলেকটোরাল ভোট হিসেবে করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে। কিন্তু এই পদক্ষেপ ঠেকিয়ে দিতে ট্রাম্পের উগ্রপন্থী সমর্থকেরা ক্যাপিটলে হামলা চালান। এদিকে নিউইয়র্ক টাইমস–এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এই হামলার পর কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান পার্টি—দুই দলের সদস্যরা তদন্তে জানান, হামলাকে কেন্দ্র করে সাতজন প্রাণ হারিয়েছেন।
হামলার পর দুই দলের নেতাদের সমালোচনার মুখে পড়েন ট্রাম্প। শুরু হয় তদন্ত। সেই তদন্ত কমিটি বিচার বিভাগের কাছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যে তিনটি অভিযোগ আনার বিষয়ে সুপারিশ করতে যাচ্ছে, সেগুলো হলো সরকারি কাজে বাধা প্রদান, বিদ্রোহের চেষ্টা ও কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে প্রতারণার ষড়যন্ত্র। এই কমিটির সঙ্গে জড়িত একটি সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্র বলছে, এই তিনটি অভিযোগ ছাড়া আরও কিছু অভিযোগ আনা হতে পারে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। আগামী সোমবার এসব সুপারিশ কমিটির বৈঠকে প্রথমে তুলে ধরা হবে।
তবে কংগ্রেসের এই সুপারিশ বিচার বিভাগ কতটা গ্রহণ করবে, তা নিয়ে খানিকটা অস্পষ্টতা রয়েছে। কারণ, বিচার বিভাগও এ নিয়ে আলাদা তদন্ত করছে। এ জন্য একজন বিশেষ কৌঁসুলিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে পরিষদের তদন্ত কমিটির প্রধান বেনি থম্পসন বলেন, অপরাধগুলো কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে সুপারিশগুলো করা হবে।
ট্রাম্প এ নিয়ে এখনো সরাসরি কিছু বলেননি। তবে তাঁর মুখপাত্র স্টিফেন চিউং তদন্ত কমিটির কড়া সমালোচনা করেছেন এবং তাদের ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
যদিও এই কমিটি নিজেদের তদন্তের ব্যাপারে বেশ আত্মবিশ্বাসী। কমিটির সদস্য জো লফগ্রেন গত শুক্রবার বলেন, কোনো অভিযোগ সুপারিশ করার ব্যাপারে তদন্ত কমিটি বেশ সতর্ক। প্রতিটি অভিযোগ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে, যে তথ্যগুলো কিনা তদন্তে উঠে এসেছে।
এদিকে তদন্ত কমিটির প্রধান থম্পসন জানিয়েছেন, সোমবারের বৈঠকের পর বুধবার পুরো প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হবে। এদিন সাধারণ মানুষ প্রতিবেদনটি দেখতে পারবেন। এর আগে সোমবারই প্রতিবেদনটি অনুমোদন দেবেন তাঁরা। আর বিচার বিভাগের কাছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে কী কী অভিযোগ আনা সুপারিশ করা হবে, সেটাও ঘোষণা করা হবে সোমবারই।
এর আগে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ট্রাম্প ছাড়াও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিষয়েও তদন্ত করছে কমিটি। এর মধ্যে ট্রাম্পের আইনজীবী জন ইস্টম্যান, সাবেক আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি, হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ মার্ক মিডোস, বিচার বিভাগের সাবেক কর্মকর্তা জেফ্রি ক্লার্কও রয়েছেন।