ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন মানতে পারেননি মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য অ্যারন বুশনেল। প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে নিজের শরীরের আগুন দেওয়ার মতো চরম পথ বেছে নিয়েছেন তিনি। গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। তবে বাঁচানো যায়নি।
২৫ বছর বয়সী অ্যারন মার্কিন বিমানবাহিনীর সদস্য। গত রোববার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের গায়ে আগুন দেওয়ার সময়ও পরনে ছিল সামরিক বাহিনীর পোশাক। এ সময় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে বলছিলেন, গাজায় ‘গণহত্যার সঙ্গে নিজেকে আর জড়াতে’ চান না তিনি।
আগুন দেওয়ার পর যখন তাঁর শরীর দাউ দাউ করে জ্বলছিল, তখনো চিৎকার করে অ্যারন বলছিলেন, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত করো’। এরপরই মাটিতে পড়ে যান তিনি। পরদিন গতকাল সোমবার যখন হাসপাতালে অ্যারনের মৃত্যু হয়, তখনো গাজায় চলছে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা। এতে উপত্যকাটিতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার ফিলিস্তিনি।
অ্যারন বুশনেলের জন্ম যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের স্যান আন্তোনিও শহরে। বেড়ে ওঠা ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যে। পড়ালেখা করেছেন সেখানকার কেপ কড উপদ্বীপের সরকারি স্কুলে। পরে সাউদার্ন নিউ হ্যাম্পশায়ার ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েন। কম্পিউটারবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড গ্লোবাল ক্যাম্পাসেও।
২০২০ সালের মে মাস থেকে মার্কিন বিমানবাহিনীতে সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছেন অ্যারন। এ বাহিনীর ৭০তম গোয়েন্দা, নজরদারি ও অনুসন্ধান শাখায় একজন সাইবার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেছেন তিনি। দায়িত্ব পালন করেছেন বিমানবাহিনীর ৫৩১তম ইন্টেলিজেন্স সাপোর্ট স্কোয়াড্রনেও।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম লিংকডইনে অ্যারন বুশনেল নিজেকে একজন ‘উচ্চাভিলাষী সফটওয়্যার প্রকৌশলী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। লিখেছেন, স্যান আন্তোনিওভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানে গত বছরের মার্চ থেকে চাকরি করছেন তিনি। আরও লিখেছেন, ২০২০ সালের নভেম্বরে বিমানবাহিনীর প্রাথমিক প্রশিক্ষণে ‘সেরা’ হয়েছিলেন। ‘কোড ব্যবহার করে জটিল সমস্যা সমাধানের প্রতিভা’ রয়েছে তাঁর।
গাজায় গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দেশটির এ অভিযানে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে ঘনিষ্ঠ মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। গাজায় হামলা চালাতে ইসরায়েলকে অস্ত্রও দিচ্ছে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরেই চলছে নিয়মিত বিক্ষোভ। বিশ্লেষকেরা বলছেন, গাজা হামলায় সমর্থনের কারণে আসন্ন নির্বাচনের আগে জনপ্রিয়তাও কমেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের।