ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর নির্ধারিত সফর শুরু করেছেন। তবে ক্যানসার আক্রান্ত ৭৫ বছর বয়সী এ রাজা সফরের প্রথম দিন আজ শনিবার বিশ্রামে থাকছেন। তাঁর স্বাস্থ্য অবস্থার কথা বিবেচনা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিয়ম অনুসারে, অস্ট্রেলিয়াসহ সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ বা কমনওয়েলথভুক্ত আরও ১৪টি দেশের রাজা হলেন চার্লস। অস্ট্রেলিয়া ও সামোয়ায় চার্লসের সফরের মেয়াদ ৯ দিন। গত বছরের মে মাসে রাজা হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে মুকুট পরার পর এটি চার্লসের প্রথম কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিদেশ সফর।
আট মাস আগে ক্যানসার শনাক্ত হয় চার্লসের। স্ত্রী ক্যামিলাকে নিয়ে গতকাল শুক্রবার রাতে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে পৌঁছান তিনি। লন্ডন থেকে সিডনি পর্যন্ত এ যাত্রায় তাঁদের সময় লেগেছে ২০ ঘণ্টার বেশি।
অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছানোর পর স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিরা রাজ দম্পতিকে স্বাগত জানান। এর পরপরই অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ ও তাঁর বাগদত্তার সঙ্গে তাঁদের একান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
রাজতন্ত্রের প্রতি স্থানীয় সমর্থন জোগাড় করার জন্য ব্রিটিশ রাজার সফরগুলোকে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ অস্ট্রেলীয় নাগরিক রাজতন্ত্রের বিলোপ চান। এক-তৃতীয়াংশ অবশ্য রাজতন্ত্র বহাল রাখার পক্ষে। অপর এক-তৃতীয়াংশ এ ব্যাপারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
গতানুগতিক ধারা থেকে রাজার এ সফর কিছুটা ভিন্ন আঙ্গিকে হচ্ছে। রাজার শারীরিক অবস্থার কথা চিন্তা করে স্বাভাবিক রীতিনীতি ও আনুষ্ঠানিকতার অনেকগুলোই বাদ দেওয়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডেও সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁর। তবে সে পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে। চার্লস ছয় দিন সিডনি ও ক্যানবেরায় থাকবেন। এরপর সামোয়ায় কমনওয়েলথ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
চার্লসের সফরসূচি অনুযায়ী, ভোরবেলা ও গভীর রাতে তিনি খুব কম অনুষ্ঠানেই যোগ দেবেন। তিনি সিডনিতে একটি বারবিকিউ আয়োজনে ও শহরের বিখ্যাত অপেরা হাউসে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এ ছাড়া হাতে গোনা কয়েকটি জমায়েতে অংশ নেবেন তিনি।
চার্লস আজ সিডনিতে একটি ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতায় উপস্থিত হবেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর আজকের যে সফরসূচি নির্ধারণ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, তিনি এদিন বিশ্রাম নেবেন।
এদিকে, আজই অস্ট্রেলিয়ার সশস্ত্র বাহিনীর প্রতিটি শাখা থেকে রাজা চার্লসকে পাঁচ তারকা র্যাংক দেওয়া হয়েছে। অস্ট্রেলিয়া সফরের প্রথম দিনটিকে চিহ্নিত করে রাখতে আনুষ্ঠানিক রীতিনীতির অংশ হিসেবে তাঁকে এ মর্যাদা দেওয়া হয়। চার্লস এখন থেকে নিজেকে অস্ট্রেলীয় সেনাবাহিনীর ফিল্ড মার্শাল, বিমানবাহিনীর মার্শাল ও নৌবাহিনী অ্যাডমিরাল হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন।