যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে ডেমোক্রেটিক পার্টির জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে গতকাল সোমবার কয়েক হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের প্রতি বাইডেন প্রশাসনের সমর্থনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শহরটির রাস্তায় নেমে আসেন তাঁরা।
রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, কয়েক ঘণ্টা ধরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের পর কয়েকজন বিক্ষোভকারী নিরাপত্তাবেষ্টনীর কিছু অংশ ভেদ করে ফেলেন। এমন অবস্থায় সেখানে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনের নিরাপত্তা দল নিশ্চিত করেছে, সম্মেলন এলাকার কাছে স্থাপিত নিরাপত্তাবেষ্টনীর অংশবিশেষ ভেঙে ফেলেছেন বিক্ষোভকারীরা। তবে তারা বলেছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিয়েছেন। সম্মেলনে আগতদের কোনো ঝুঁকি নেই।
রয়টার্সের প্রত্যক্ষদর্শীরা চার ব্যক্তিকে আটক হতে দেখেছেন। তাঁদের হাতে হাতকড়া পরানো ছিল। ওই বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে কি না, সে ব্যাপারে ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কনভেনশনের নিরাপত্তা দলের বক্তব্য জানতে চেয়েছিল রয়টার্স। তবে সাড়া পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে ফেলার আগে বিক্ষোভকারীরা শিকাগোর ওয়েস্ট সাইডে অবস্থিত পার্কে পৌঁছান এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবি জানান। বিক্ষোভকারীরা বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের বিরুদ্ধে হতাশা জানান। আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে ‘খুনি কমলা’ আখ্যা দেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে শিকাগো পুলিশ ওই পার্কের চারপাশ ঘিরে রেখেছিল। এর মধ্যে কিছু পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলেন আর কিছু পুলিশ বাইকে অবস্থান করছিলেন।
ডেমোক্রেটিক পার্টির সম্মেলনস্থলের বাইরে একটি পার্কে ‘মার্চ অন দ্য ডিএনসি’ নামে এ বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে থেকে বিক্ষোভকারীরা পার্কে জড়ো হতে থাকেন। সোমবার বিকেল নাগাদ কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী পার্কে জড়ো হন। আয়োজকদের আশা ছিল, পার্কটি বিক্ষোভকারীতে পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তবে সোমবার বিকেল পর্যন্ত এটি মাত্র অর্ধেক পূর্ণ ছিল।
২০০টির বেশি সংগঠন একজোট হয়ে এ কর্মসূচি পালন করছে।
আগামী বৃহস্পতিবার জাতীয় সম্মেলনে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কমলা হ্যারিসের আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন গ্রহণের দিনে আরও একটি বড় বিক্ষোভ আয়োজনের কথা আছে।
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে সামরিক ও আর্থিক সহায়তা দেওয়ার প্রতিবাদে কয়েক মাস ধরে বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থীরা। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুসারে, চলমান ওই যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলার জবাবে গাজায় সেদিন থেকেই হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। ইসরায়েলের দাবি, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ মানুষ নিহত হয়েছে।