সাবমেরিনটি পাওয়া গেলেও আরোহীদের বাঁচানো ‘প্রায় অসম্ভব’, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

পানির নিচে সাবমেরিন টাইটান
ফাইল ছবি: রয়টার্স

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার সকাল নাগাদ সাবমেরিন টাইটানের মজুত অক্সিজেন ফুরিয়ে যাওয়ার কথা। এতে ক্ষীণ হয়ে আসবে সেটিতে থাকা যাত্রীদের বেঁচে থাকার আশা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অক্সিজেন ফুরানোর আগে সাবমেরিনটির সন্ধান পাওয়া গেলেও সেটির আরোহীদের উদ্ধার করা দুঃসাধ্য হবে।

গত রোববার আটলান্টিকের তলদেশে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখাতে পাঁচ আরোহীকে নিয়ে রওনা দেয় টাইটান। এর ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিট পর সেটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর পর থেকেই সেটি উদ্ধারে তৎপরতা চালাচ্ছে বেশ কয়েকটি দেশের উদ্ধারকারী দল। তবে এখনো কোনো সুখবর মেলেনি।

টাইটানিক ডুবে যায় ১৯১২ সালে। উত্তর আটলান্টিকের তলদেশে ১২ হাজার ৫০০ ফুট গভীরে জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাগরের তলদেশে এই গভীরতায় যদি টাইটান থাকে, তাহলে সেটি বা আরোহীদের উদ্ধার করা অনেক কঠিন হবে। কারণ, সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছায় না, পানির চাপও অনেক বেশি। টাইটানিক নিয়ে বিষেশজ্ঞ টিম মালটিন বলেন, এমন পরিবেশে সাগরের তলদেশে টাইটান থেকে আরেক সাবমেরিনে যাত্রীদের উদ্ধার করে নেওয়া ‘প্রায় অসম্ভব’।

এদিকে শেষ মুহূর্তে এসে উদ্ধারকাজ জোরদার করতে ঘটনাস্থলে যাচ্ছে ফ্রান্সের গবেষণা জাহাজ ‘আটলান্টা’। জাহাজটিতে ‘ভিক্টর-৬০০০’ নামের একটি রোবট রয়েছে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের চেয়ে বেশি গভীরতায় পৌঁছাতে পারে সেটি। আর রোবটটি পানির তলদেশে আটকে পড়া কোনো যান উদ্ধার করে ওপরে তুলে আনতে পারে। ভিক্টর-৬০০০ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বলছেন, টাইটানের ওজন ৯ হাজার ৫২৫ কেজি। সাগরের তলদেশ থেকে এই ওজন উত্তোলনের সক্ষমতা এককভাবে ভিক্টর–৬০০০–এর নেই।

রোববার কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ড প্রদেশের সেন্ট জন শহর থেকে টাইটানকে নিয়ে রওনা দেয় ‘পোলার প্রিন্স’ নামের একটি জাহাজ। আটলান্টিকের যেখানে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে সেখানে জাহাজটি পৌঁছানোর পর সাগরের তলদেশের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। পানির নিচে যাওয়ার আগে সেটির প্রবেশপথ বাইরে থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কারণে সাবমেরিনটি কোনোভাবে সাগরের ওপরে ভেসে উঠলেও আরোহীরা সেটি থেকে বের হতে পারবেন না।

সংকট যতই গভীর হোক না কেন থেমে থাকছেন না উদ্ধারকারীরা। পোলার প্রিন্সের মালিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান সেন লিট বলেছেন, সাবমেরিনটিতে এখনো জীবন রক্ষাকারী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত হাল ছাড়বেন না তাঁরা। আর টাইটানের আরোহীদের একজন ব্রিটিশ ধনকুবের হ্যামিশ হার্ডিংয়ের বান্ধবী জ্যানিকে মিকেলনেসের ভাষ্য, তাঁদের যদি জীবিত উদ্ধার করা যায়, তা হবে একটি অলৌকিক ঘটনা।