যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত একটি রাষ্ট্রীয় অর্থবিল (সরকারি ব্যয় প্যাকেজ) মার্কিন কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে পাস হতে ব্যর্থ হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সরকারকে অর্থায়নের জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে আনা এই বিলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকজন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা ভোট দিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তাঁরা বিলটি পাসে ট্রাম্পের আহ্বান উপেক্ষা করলেন।
বিলটি পাস হতে ব্যর্থ হওয়ায় আগামীকাল শনিবার থেকে দেশটির কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোর কার্যক্রম আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যা ‘শাটডাউন’ নামে পরিচিত।
দ্রুত এগিয়ে আসা এই সরকারি ‘শাটডাউন’ এড়ানোর ক্ষেত্রে কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা এখন পর্যন্ত মার্কিন কংগ্রেসের সামনে দেখা যাচ্ছে না।
‘শাটডাউন’ হলে কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর নির্ভরশীল নানা কর্মসূচি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। সরকারের বিভিন্ন বিভাগে অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। বিমানবন্দরে চলাচল ব্যাহত হবে। সে ক্ষেত্রে আসন্ন ক্রিসমাসের ভ্রমণ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হতে পারে।
রাষ্ট্রীয় অর্থ বিলটির ওপর ভোট ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির মধ্যে সুস্পষ্টভাবে একটি ফাটল তৈরি করেছে।
আগামী বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসের দায়িত্ব নেবেন। এই জানুয়ারিতেই দুই কক্ষবিশিষ্ট মার্কিন কংগ্রেসের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেবেন রিপাবলিকানরা। তা সত্ত্বেও রিপাবলিকান পার্টির মধ্যকার ‘ফাটল’ আগামী বছর আবার দেখা দিতে পারে।
গত ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ট্রাম্প। তিনি আগামী ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন।
রাষ্ট্রীয় অর্থ বিলটির পক্ষে ভোট দেওয়ার জন্য ট্রাম্প প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের চাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু দলটির কট্টরপন্থী সদস্যরা ট্রাম্পের আহ্বানে সাড়া দিয়ে বিলটির পক্ষে সমর্থন দিতে অস্বীকৃতি জানান।
বিলটির পক্ষে ভোট পড়ে ১৭৪টি। আর বিপক্ষে ২৩৫টি। বিলটির বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৩৮ জন রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতে সরকারি তহবিলের মেয়াদ শেষ হবে। বিলটি পাস হলে তা তহবিল জোগানোর মেয়াদ বাড়াত। একই সঙ্গে তা ঋণের সীমা (ঋণ নেওয়ার সর্বোচ্চ পরিমাণ) স্থগিত করত।
বিলটি পাস হতে ব্যর্থ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এখন পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সে বিষয়ে প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান স্পিকার মাইক জনসনের কাছে জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকেরা। কিন্তু তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। তিনি শুধু বলেছেন, ‘আমরা আরেকটি সমাধান নিয়ে আসব।’
মার্কিন আইনপ্রণেতারা অর্থ বিলটি পাসে ব্যর্থ হলে মার্কিন সরকারের কার্যক্রম আংশিক ‘শাটডাউনে’ চলে যাবে। এ ছাড়া ২০ লাখের বেশি ফেডারেল কর্মীর বেতন-ভাতা পরিশোধ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।