যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের লাহাইনা শহরে দাবানলে মৃতের সংখ্যা স্থানীয় সময় গত শনিবার নাগাদ ৯৩ জনে দাঁড়িয়েছে। মাউই কাউন্টির ওয়েবসাইটে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এক শতাব্দীর বেশি সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এটিই এখন সবচেয়ে প্রাণঘাতী দাবানল।
হাওয়াইর দাবানলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় লাহাইনা শহরের ধ্বংসস্তূপে নিখোঁজদের অবস্থান জানতে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার দ্রুত ছড়িয়ে পড়া দাবানলে ঐতিহাসিক পর্যটন শহরটি মাটিতে মিশে যায়। ভবনগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। ভস্ম হয়ে যায় গাড়িগুলো। ঘটনার চার দিন পর দাবানলের ভয়াবহতা আরও প্রকাশ্যে আসে। এর আগে অঙ্গরাজ্য হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যোগ দেওয়ার এক বছর পর ১৯৬০ সালে সুনামিতে হাওয়াইতে ৬১ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন।
এর আগে ২০১৮ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার প্যারাডাইজ শহরে দাবানলে ৮৫ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। হাওয়াইয়ের দাবানল শনিবার সেই সংখ্যা ছাড়িয়ে গেল। আর ১৯১৮ সালে মিনেসোটা ও উইসকনসিনে দাবানলে ৪৫৩ জন প্রাণ হারান।
স্থানীয় সময় শনিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে হাওয়াইয়ের গভর্নর জশ গ্রিন সতর্ক করে বলেন, আরও মরদেহ উদ্ধার হচ্ছে। মৃতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া অব্যাহত থাকতে পারে।
মাউই কাউন্টির পুলিশপ্রধান জন পেলেটিয়ার বলেন, মরদেহ শনাক্তে প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে এখন পর্যন্ত মাত্র ৩ শতাংশ এলাকায় তল্লাশি কার্যক্রম চালানো গেছে।
সেখানকার পরিস্থিতি তুলে ধরে কর্মকর্তারা বলেন, অনেকগুলো বিষয় মিলে দুঃস্বপ্নের মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এর মধ্যে ছিল যোগাযোগব্যবস্থা ভেঙে পড়া, উপকূলে হারিকেনের প্রভাবে ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হাওয়া এবং বেশ কয়েক মাইল দূরে পৃথক আরেকটি দাবানলের ঘটনা। এসব কারণে যথাযথ সময়ে সতর্কতা জারি করা এবং বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়াটা জরুরি ব্যবস্থাপনা সংস্থার পক্ষে অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সির (ফেমা) হিসাব অনুযায়ী, লাহাইনা পুনর্গঠনে আনুমানিক ৫৫০ কোটি ডলারের প্রয়োজন হবে। সেখানকার ২ হাজার ২০০ বাসাবাড়ি ও স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ২ হাজার ১০০ একরের বেশি এলাকা পুড়ে গেছে।