ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন
ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জো বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বক্তব্যকে পুঁজি করতে চান বাইডেন

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বক্তব্য সব সময় তাঁর নির্বাচনী প্রচারের জন্য কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এখন এটিই তাঁর জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। পর্নো তারকাকে ঘুষের মামলায় ১৫ এপ্রিল তাঁর বিচার শুরু হতে যাচ্ছে। আবার আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এতে তিনি রিপাবলিকান দলের হয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনের বিরুদ্ধে লড়বেন। এ সময় তাঁর আক্রমণাত্মক বক্তব্য উত্তেজনাপূর্ণ রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করেছে।

গত শুক্রবার ট্রাম্প একটি ভিডিও শেয়ার করেছেন, যেখানে ট্রাকের পেছনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে বেঁধে রাখার ছবি রয়েছে। এ বিষয়টি নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে ঘুষের মামলায় নিউইয়র্কের একটি আদালতের বিচারক জুয়ান মারকানকে আক্রমণ করে বক্তব্য দিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি ওই বিচারকের মেয়ের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, তিনি ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রচার শিবিরের সঙ্গে জড়িত।

ক্যালিফোর্নিয়ার সুপিরিয়র কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারক লাডোরিস কর্ডেল বলেন, ‘আমার দুই দশকের বিচারিক জীবনে হাজারো শুনানি হয়েছে। কিন্তু তাতে বিবাদী কাউকে আমার আদালতে ট্রাম্পের মতো আদালত ব্যবস্থার প্রতি এমন অসম্মান করতে দেখিনি।’

তবে ট্রাম্পের রিপাবলিকান দল বরাবরই ট্রাম্পের এ ধরনের আচরণ এড়িয়ে যায় বা মাফ করে দেয়। এর কারণ দলে তাঁর প্রভাব। কেউ তাঁর বিরুদ্ধে গেলে রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। আবার তৃণমূল পর্যায়ের ভোটাররা অনেকে ট্রাম্পকে এ আচরণের জন্য পছন্দ করেন। তাঁর সমর্থকেরা মনে করেন, আইনি ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর সমালোচনা ন্যায্য, কারণ তিনি বাইডেনসহ ডেমোক্র্যাটদের রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার।

এদিকে নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের এই আক্রমণাত্মক বক্তব্যকে পুঁজি করে লড়তে চাইছেন বাইডেন। তাঁর প্রচার শিবির থেকে ট্রাম্পের এ ধরনের বক্তব্যকে গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। এ ছাড়া ট্রাম্পের ক্রমাগত আক্রমণাত্মক বক্তব্য নিয়ে বিচারকেরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত সপ্তাহে ঘুষ প্রদানের মামলায় ‘গ্যাগ অর্ডার’ জারি করেছেন নিউইয়র্কের একটি আদালত। ম্যানহাটান ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি আলভিন ব্রাগের অনুরোধে বিচারপতি হুয়ান মারচান গত মঙ্গলবার ওই ‘গ্যাগ অর্ডার’ জারি করেন।

ওই মামলার ওপর ‘গ্যাগ অর্ডার’ জারির অর্থ হলো ট্রাম্প বা ট্রাম্প শিবিরের কেউ এই মামলা, মামলাসংশ্লিষ্ট আদালতকর্মী, জুরি, সাক্ষী এবং জেলা অ্যাটর্নি কার্যালয়ের কোনো আইনজীবী বা তাঁদের পরিবারকে নিয়ে জনসমক্ষে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে বা মামলাসংক্রান্ত কোনো তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন না।

গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনের ডিস্ট্রিক্ট জজ রেগি ওয়ালটন বিচারক ও আদালতের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের আক্রমণাত্মক বক্তব্যের বিপদ সম্পর্কে বলেন, এ ধরনের মন্তব্য যখন হুমকি হয়, বিশেষত তা যদি কারও পরিবারের দিকে ইঙ্গিত করে করা হয় তবে তা সমস্যা সৃষ্টি করে।