পানামা খাল ও গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণ করতে প্রয়োজনে সামরিক ও অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগের সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেননি যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ের পর থেকেই ট্রাম্প তাঁর বৃহত্তর সম্প্রসারণবাদী মনোভাবের পক্ষে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন।
আগামী ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেবেন ট্রাম্প। অর্থাৎ, তাঁর ক্ষমতায় বসতে এখনো দুই সপ্তাহ বাকি আছে। কিন্তু ট্রাম্প এখনই তাঁর আক্রমণাত্মক বৈদেশিক নীতির রূপরেখার প্রকাশ শুরু করেছেন। এ ক্ষেত্রে কূটনৈতিক বিবেচনা বা মার্কিন মিত্রদের উদ্বেগকে তিনি খুব সামান্যই আমলে নিচ্ছেন।
গতকাল মঙ্গলবার ট্রাম্পের ফ্লোরিডা রিসোর্টে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পানামা খাল এবং গ্রিনল্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার যে চেষ্টা তিনি করছেন, সেই প্রক্রিয়ায় সফল হতে তিনি কোনো ধরনের সামরিক ও অর্থনৈতিক বল প্রয়োগ করবেন না—বিশ্বকে তিনি এমন নিশ্চয়তা দিতে পারবেন কিনা।
জবাবে ট্রাম্প কোনো রাখঢাক না রেখে সরাসরি বলেন, ‘না, ওই দুটোর কোনোটির বিষয়ে আমি আপনাদের কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারছি না। তবে আমি এটা বলতে পারি, অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য আমাদের ওই দুটিকেই প্রয়োজন।’
সেদিনই ট্রাম্পের এমন বক্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন পানামার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হ্যাভিয়ের মার্তিনেজ-আচা। মঙ্গলবার তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শুধু পানামার জনগণের হাতে এই খালের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে এবং তাদের হাতেই এই খালের নিয়ন্ত্রণ থাকবে।’
নৌপথে বিশ্ববাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পথ পানামা খাল। যুক্তরাষ্ট্র এই খালটির নির্মাণ করেছে এবং শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের হাতেই পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ ছিল। পরে ১৯৯৯ সালে মধ্য–আমেরিকার দেশ পানামার হাতে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে গত ডিসেম্বরে ট্রাম্প বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে গ্রিনল্যান্ডের মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি। নিজের প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প আর্কটিক অঞ্চলের দ্বীপ গ্রিনল্যান্ড কিনে নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন।
অবশ্য ডেনমার্ক বলেছে, তাদের স্বায়ত্বশাসিত এই অঞ্চল বিক্রির জন্য নয়।
ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাবে ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিতে ফ্রেডিরিকসেন গতকাল মঙ্গলবার বলেছেন, ‘আমি মনে করি, শুধু অর্থনৈতিকে লাভের জন্য একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই করা ভালো কিছু নয়। কারণ, আমরা ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অংশীদার।’