বিপর্যয়কর শক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে আঘাত হেনেছে হারিকেন ‘ইয়ান’। তীব্র বাতাস, মুষলধারে বৃষ্টি এবং সমুদ্রের বিধ্বংসী ঢেউ নিয়ে গতকাল বুধবার ঘূর্ণিঝড়টি ফ্লোরিডার উপসাগরীয় উপকূলে আঘাত হানে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, হারিকেন ইয়ান সাম্প্রতিক বছরগুলোয় যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়গুলোর মধ্যে অন্যতম। স্থানীয় সময় বেলা ৩টা ৫ মিনিটে কায়ো কোস্টা দ্বীপের কাছে ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানে।
উপকূলে আঘাত হানার সময় চার মাত্রার হারিকেন ইয়ানের বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ২৪১ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) ছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)।
ঝড়ের তীব্রতার দিক থেকে পাঁচ মাত্রার হারিকেনের চেয়ে ইয়ানের গতিবেগ সামান্য কম। সবচেয়ে মারাত্মক পাঁচ মাত্রার হারিকেনের বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ধরা হয় ১৫৭ মাইল।
এনএইচসি জানায়, দ্বীপে আঘাত হানার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর বন্দরনগরী পুন্তা গোর্দার ঠিক দক্ষিণ উপকূল দিয়ে ফ্লোরিডার মূল ভূখণ্ডে উঠে আসে হারিকেন ইয়ান। এ সময় বাতাসের গতিবেগ সামান্য কমে ঘণ্টায় ১৪৫ মাইলে নেমে আসে।
ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিস বলেন, প্রাণঘাতী ঘূর্ণিঝড় ইয়ানের প্রভাবে উপকূলের কিছু এলাকা ১২ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে।
আবহাওয়ার পূর্বাভাসে ব্যাপক বজ্রবৃষ্টি ও সম্ভাব্য টর্নেডোর বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি মূল ভূখণ্ডের দিকে আরও এগোলে মধ্য ফ্লোরিডায় দুই ফুট পর্যন্ত বৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জাতীয় আবহাওয়া পরিষেবার পরিচালক কেন গ্রাহাম বলেন, ‘এটি এমন একটি ঝড়, যা নিয়ে আমরা আগামী বহু বছর কথা বলব। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা।’
ইয়ান মূল ভূখণ্ডে আঘাত হানার এক ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ভিডিও ও স্থানীয় টেলিভিশনে দেখা যায়, ঝড়ের তোড়ে ধেয়ে আসা পানি বিভিন্ন এলাকায় প্রবেশ করেছে। কোথাও কোথাও পানি বাড়ির ছাদ পর্যন্ত স্পর্শ করেছে।
ফোর্ট মায়ার্স বিচ শহরটি পানিতে প্রায় তলিয়ে গেছে। গাড়িসহ বাড়িঘরের ধ্বংসাবশেষ ভেসে যেতে দেখা গেছে। ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে এখন পর্যন্ত ১০ লাখের বেশি বাসিন্দা বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এদিকে, কিউবার পশ্চিমাঞ্চলে হারিকেন ইয়ান আঘাত হানার পর দেশটির ১ কোটি ১০ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশই বিদ্যুৎ–বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ইয়ানের আঘাত হানার এক দিন পরও বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।