যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার বলেছেন, টিকটক জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে তিনি একই সঙ্গে এ কথাও বলেছেন, জনপ্রিয় এ অ্যাপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলে বাচ্চাদের কেউ কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। আর এতে শুধু মেটার মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের অবস্থানই শক্তিশালী হবে। ট্রাম্পের শেষ কথাটির সমালোচনা করেছেন রিপাবলিকানরা।
চীনা মালিক প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সকে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছয় মাস সময় বেঁধে দিতে একটি বিল এখন মার্কিন কংগ্রেস খতিয়ে দেখছে। আর এমন সময়েই ট্রাম্প টিকটককে নিয়ে নিজের উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করলেন। যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ কোটি মানুষ সংক্ষিপ্ত ভিডিও তৈরির অ্যাপ টিকটক ব্যবহার করে থাকে।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা ফাস্ট ট্র্যাক বিধির আওতায় ভোটাভুটিতে অংশ নেবেন। এতে বিলটি পাস করাতে দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যকে ‘হ্যাঁ’ ভোট দিতে হবে।
সোমবার রাতে কংগ্রেসকে পাঠানো টিকটক কর্তৃপক্ষের একটি চিঠি হাতে পেয়েছে রয়টার্স। চিঠিতে লেখা হয়েছে, টিকটক কোম্পানির মালিক চীন সরকার নয় এবং তারা এটি নিয়ন্ত্রণও করে না। কোম্পানিটি বিক্রি হয়ে গেলে নতুন ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্রের ডেটাগুলো সংরক্ষণের জন্য টিকটকের নেওয়া উদ্যোগগুলো আর চালাবে না। এ কাজটি করতে টিকটক ১৫০ কোটি ডলার খরচ করেছে।
টিকটকের মালিক প্রতিষ্ঠান চিঠিতে লিখেছে, এতে যুক্তরাষ্ট্রের ডেটার নিরাপত্তা বরং কমে যাবে।
দুটি সূত্র বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা (এফবিআই), বিচার বিভাগ এবং জাতীয় গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালকের কার্যালয় থেকে আজ মঙ্গলবার প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের ব্রিফিং করার কথা।
এটি হবে গোপনীয় ব্রিফিং। গতকাল সোমবার এক শুনানিতে এফবিআইয়ের পরিচালক ক্রিস রে টিকটক নিয়ে তাঁর উদ্বেগ পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ একটি নথিতে টিকটককে নিয়ে নিজেদের নিরাপত্তা উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। রয়টার্সই সবচেয়ে প্রথমে রিপোর্টটি করেছিল।
সোমবার সিএনবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘ফেসবুকের আকার বেড়ে দ্বিগুণ হয়ে যাক তা আমি চাই না। আপনারা যদি টিকটক নিষিদ্ধ করেন, তবে ফেসবুক এবং অন্যরা বিশেষ করে ফেসবুকের অনেক ফায়দা হবে। আর আমি মনে করি, ফেসবুক খুব অসৎ।’
মার্কিন কংগ্রেসে বিলটি পাস হলে বাইটড্যান্সকে টিকটকের মালিকানা ছেড়ে দেওয়ার জন্য ১৬৫ দিন সময় দেওয়া হবে। এতে তারা ব্যর্থ হলে অ্যাপল, অ্যালফাবেটের গুগল এবং অন্যদের পরিচালিত অ্যাপ স্টোরগুলো আইনগতভাবে টিকটককে কিংবা বাইটড্যান্স পরিচালিত অ্যাপগুলোকে ওয়েব হোস্টিং সার্ভিস দিতে পারবে না।
২০২০ সালে ট্রাম্প টিকটক এবং চীনা মালিকানাধীন আরেক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাট নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে আদালতের বাধায় তিনি আর সফল হননি।
টিকটক অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয়। নির্বাচনের বছরে দেশটির কংগ্রেসের দুই কক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটে টিকটকসংক্রান্ত বিলটি পাস হওয়া কঠিন হতে পারে।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে গত মাসে বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রচার শিবির টিকটকের ব্যবহার শুরু করেছে। তবে ট্রাম্পের প্রচার শিবির তা করেনি।