যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহ করা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালানোর জন্য কিয়েভকে অনুমতি দিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেওয়া সিদ্ধান্তটির প্রশংসা করেছে ইউক্রেন। গতকাল সোমবার ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিগা বলেছেন, এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে কিয়েভের আত্মবিশ্বাস জোরালো হবে।
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক সামনে রেখে সিবিগা বলেন, ‘এ সিদ্ধান্ত গেম চেঞ্জার হতে পারে। যত দীর্ঘ সময় ইউক্রেন হামলা চালাতে পারবে, যুদ্ধ তত কম সময় স্থায়ী হবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার এক হাজার দিন পূর্তি উপলক্ষে নিরাপত্তা পরিষদের ওই বৈঠক আয়োজন করা হয়েছে।
সিবিগা মনে করেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে সামরিক স্থাপনায় হামলার পূর্ণ অধিকার কিয়েভের আছে। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্রের পরিস্থিতির ওপর এর (বাইডেনের সিদ্ধান্তের) ইতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস আগে ইউক্রেনকে রাশিয়ায় দূরপাল্লার মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন জো বাইডেন। নবনির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই মাস পর বাইডেনের স্থলাভিষিক্ত হবেন। ধারণা করা হয়, ট্রাম্প কিয়েভকে সহযোগিতার ব্যাপারে কম আগ্রহী।
গতকাল সোমবার রাশিয়া অভিযোগ করেছে, বাইডেন এ পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছেন।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক ঘটনাবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রোজমেরি ডিকারলো বলেন, বেসামরিক নাগরিকদের অবস্থান যেখানেই হোক না কেন, সব পক্ষকে অবশ্যই তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
রোজমেরি ডিকারলো বেসামরিক মানুষদের মৃত্যুহার বেড়ে যাওয়া এবং সপ্তাহান্তে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। ১২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ৯০টি ড্রোন ব্যবহার করে চালানো ওই হামলায় ইউক্রেনের বিদ্যুৎব্যবস্থার উল্লেখজনক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের দূত লিন্ডা টমাস গ্রিনফিল্ডও ইউক্রেনের জন্য মার্কিন সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি উল্লেখ করেননি।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘ক্রেমলিন ইউক্রেনকে অন্ধকারের মধ্যে ঠেলে দিতে চায়। তবে আমাদের অবশ্যই এর স্বাধীনতার আলোর পক্ষে দাঁড়াতে হবে। এক হাজার দিন হয়ে গেল, আমরা এখনো ইউক্রেনের পক্ষে আছি।’
জাতিসংঘে রাশিয়ার দূত ভাসিলি নেবেঞ্জিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠক প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁর মতে, রাশিয়াকে দানব প্রমাণের জন্য এ বৈঠক গণমাধ্যমগুলোর জন্য একটি সুযোগ মাত্র।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া বলেছে ইউক্রেন যুক্তরাষ্ট্রের দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়, রাশিয়ার ভূখণ্ডের ভেতরে এ ধরনের হামলার মধ্য দিয়ে বোঝা যাবে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের স্যাটেলাইটগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে শত্রুতায় সরাসরি জড়িত।