যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ন্যাটোর তিন দিনব্যাপী সম্মেলনের শেষ দিনে অংশ নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজের অবস্থান, নিজের স্বাস্থ্য, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন বাইডেন।
ন্যাটো সম্মেলন চলাকালে একপর্যায়ে বাইডেন বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেন জয়ী হবে। তিনি ইউক্রেনের নেতা ভলোদিমির জেলেনস্কির সাহসিকতার প্রশংসা করেন। তবে প্রশংসা করতে গিয়েও ভুল করে ফেলেন বাইডেন। যুদ্ধে বিপর্যস্ত ও কিছুটা ক্লান্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির দিকে ঘুরে বাইডেন বলেন, ‘ভদ্রমহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ, প্রেসিডেন্ট পুতিন।’
অবশ্য পরক্ষণেই নিজেকে শুধরে নেন বাইডেন। পরিস্থিতি সামলাতে সাহায্য করেন জেলেনস্কিও। সাবেক এই কৌতুক অভিনেতা সঙ্গে সঙ্গেই বলে ওঠেন, ‘আমি পুতিনের চেয়ে ভালো।’
বাইডেনের এই ভুল ট্রাম্পের সঙ্গে নির্বাচনী বিতর্কে তাঁর দুর্বল অবস্থানের কথা আবারও মনে করিয়ে দেয়। ওই বিতর্কে বাইডেনের দুর্বল অবস্থানের কারণে ডেমোক্র্যাট ও দেশটির জনগণের অনেকেই তাঁর প্রতি আস্থাহীনতায় ভুগছেন।
তবে ন্যাটো সম্মেলনে অংশ নেওয়া কোনো দেশের নেতাই বাইডেনকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় বা তাঁর সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন করেননি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ বলেন, তিনি হোয়াইট হাউসে নৈশভোজে বাইডেনের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি সব সময়ই দায়িত্বশীল একজন প্রেসিডেন্টকে দেখেছি, যিনি বিভিন্ন বিষয়ে ভালোভাবে জানেন।’
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজও একই সুরে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের সাধারণ জোটের নেতৃত্ব প্রমাণ করেছেন বাইডেন।’ জেলেনস্কিকে বাইডেনের পুতিন বলে সম্বোধন করা নিয়েও কথা বলেন শলৎজ। তিনি বলেন, ‘মুখ ফসকে কথা বেরিয়ে যেতেই পারে, যদি আপনি সবার ওপর নজর রাখেন, আপনি অনেক কিছু খুঁজে পাবেন।’
যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারও বাইডেনের পক্ষ নিয়েছেন। তিনি বলেন, বাইডেনের নেতৃত্ব নিয়ে যেসব অভিযোগ রয়েছে, তা ভুল। ওভাল অফিসে বাইডেনের সঙ্গে এক ঘণ্টার বেশি সময় আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, বাইডেন সবদিক দিয়েই যোগ্য আছেন।
পোল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রেজ দুদে, ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার স্টাবও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে বাইডেন যথেষ্ট যোগ্য বলে মত দেন।
ন্যাটোর অনেক নেতাই চান না আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হোক। প্রকাশ্যে ন্যাটোর সমালোচক ট্রাম্পকে তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বোঝা বলে মনে করেন।