নিউইয়র্ক নগরীর স্কুল শিক্ষার্থীরা যেন পরস্পরের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ না করে, সে জন্য কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে নগরীর শিক্ষা বিভাগ। বৈষম্যমূলক আচরণ প্রমাণিত হলে স্কুল আচার্যের প্রবিধান ৪৪৩ বিধি অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে প্রত্যেক অভিভাবকের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এরই মধ্যে শিক্ষা বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী কয়েকজন শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে কিছু স্কুলের কর্তৃপক্ষ। ৪ মার্চ জ্যামাইকার কিউ ৫০ স্কুলের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক এমন একটি চিঠি পেয়েছেন বলে স্বীকার করেন। ওই শিক্ষার্থীর অভিভাবক তাহের খান শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক একটি চিঠি প্রাপ্তির কথা জানান।
নিউইয়র্ক নগরীর বিভিন্ন স্কুলে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অভিবাসীদের সন্তানেরা লেখাপড়া করছে। অনেকেই ইতিমধ্যে বিভিন্নভাবে সহপাঠীদের দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়েছে। বিষয়টি শিক্ষা বিভাগের নজরে এলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়। ওই চিঠিতে নগরীর শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এক শিক্ষার্থী অন্য শিক্ষার্থী কর্তৃক হয়রানি হলে অথবা একে অন্যকে ভয়ভীতি প্রদর্শন করলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। স্কুলের খেলার মাঠ, বাস কিংবা স্কুলে আয়োজিত যেকোনো কর্মকাণ্ডে কেউ কাউকে হেয় বা বিদ্রূপ করলে, তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা অধিদপ্তর। এ ছাড়া মৌখিক টিপ্পনী কাটা, কাউকে আলাদা করতে গ্রুপ করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ডকেও অপরাধ হিসেবে গণ্য করার কথা বলা হয়েছে চিঠিতে। একই সঙ্গে কারও বিরুদ্ধে দেয়াল লিখনের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ধরনের যেকোনো আচরণের শিকার হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীকে স্কুলের অধ্যক্ষকে তা জানানোর জন্য বলা হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তা তদন্তে কমিটি গঠন করে ঘটনার সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। পরে কোনো বৈষম্যমূলক আচরণের প্রমাণ পেলে তা সম্পর্কে উভয় শিক্ষার্থীর অভিভাবককে জানানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে আচার্য প্রবিধান ৪৪৩ বিধি অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। আচরণটি গুরুতর হলে তা সম্পর্কে পুলিশি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
এ বিষয়ে জ্যাকসন হাইটসের অভিভাবক মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘এই চিঠি প্রাপ্তিতে আমরা অনেক সচেতন হয়েছি। আমাদের ছেলে-মেয়েরা যাতে স্কুলে কারও সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ না করে, সে বিষয়ে তাদের শিক্ষা ও পরামর্শ দেব।’