আমেরিকায় অভিবাসী বাংলাদেশিদের সংগঠনগুলোর ছাতা সংগঠন হিসেবে খ্যাত বাংলাদেশ সোসাইটি ইনকের আসন্ন নির্বাচনে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেছেন সংগঠনের সাবেক কর্মকর্তা ওসমান চৌধুরী। মামলার আরজিতে তিনি সোসাইটির ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণের বিষয়ে নানা অভিযোগ এনে আদালতের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কুইন্স কাউন্টি আদালতে দায়ের করা মামলায় ওসমান চৌধুরী বাংলাদেশ সোসাইটির কর্মকর্তাদের বিবাদী করেন।
এবার নির্বাচনে বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদে
৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ‘রব-রুহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল থেকে ১৯ জন করে এবং সভাপতি পদে সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন ও সাধারণ সম্পাদক পদে আবদুল মোমেন (সোহেল) স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। পরে নির্বাচন কমিশন মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের দুই সদস্যের মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। ফলে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকায় ৩৮ জনের নাম প্রকাশ করা হয়। এ নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৩।
সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা ওসমান চৌধুরী নিজেও নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি আর মনোনয়নপত্র জমা দেননি।
অভিযোগ রয়েছে, সোসাইটির নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান—তাঁরা নিজেদের অর্থ দিয়ে প্রবাসীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেন। অনেক প্রবাসী নিজেই জানেন না, তিনি সোসাইটিতে ভোটার হয়েছেন। যারা প্রভাবশালী এই সংগঠনের নেতৃত্বে আসতে চান, তারাই নিজেদের পকেট থেকে অর্থ দিয়ে সদস্য ফরম জমা দিয়ে থাকেন। এর ফলে সোসাইটির সঙ্গে প্রবাসীদের সম্পৃক্ততা দিন দিন কমছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কমিউনিটির অনেকে অভিযোগ করেন, সোসাইটির নির্বাচন নিয়ে চলে অর্থের খেলা। কয়েক লাখ ডলারের ব্যয়বহুল এই নির্বাচন নিয়ে এখন চলছে হুলুস্থুল কর্মকাণ্ড। নিউইয়র্কে বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিনই সভা সমাবেশ চলছে। নির্বাচনে প্রার্থীরা ভোটার টানতে নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। সোসাইটিকে সঠিকভাবে পরিচালনায় তাঁরাই যোগ্য—প্রবাসীদের এ বিষয় বোঝাতে জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন। দেশের মতো প্রার্থীদের পোস্টারে পোস্টারে ছেয়ে গেছে জ্যাকসন হাইটস, ব্রুকলিন, ওজোন পার্ক এবং ব্রঙ্কসের নানা এলাকা। আমেরিকার মূলধারার কোনো নির্বাচনেও এমন সব রঙিন পোস্টার দেখা যায় না।
প্রবাসীদের এক সময়ের প্রিয় এই সংগঠন নিয়ে এর আগেও আদালতে যাওয়ার ইতিহাস রয়েছে। সর্বশেষ ওসমান চৌধুরী গেলেন আদালতে। তাঁর মামলা নিয়ে এখন বৈঠকি আলাপ শুরু হয়েছে।
এবারের সোসাইটির নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল ইউ আহমেদ বলেন, আদালতের নোটিশ তাঁরা পেয়েছেন। ওসমান চৌধুরী সোসাইটির নানা অনিয়ম ও ভোট গ্রহণের নিয়মকানুন উল্লেখ করে নির্বাচনের ওপর আদালতের নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করেছিলেন। ২০ দিন সময় দিয়ে সোসাইটিকে জবাব দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।