যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার সংক্ষিপ্ত নাম সিআইএ। জাতীয় স্বার্থে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী এই গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের দুর্ধর্ষ অভিযানের কথা অনেকেরই জানা। তাঁরা সমাধান করেছেন অনেক বড় বড় রহস্যেরও। কিন্তু সেই গোয়েন্দা সংস্থারই সদর দপ্তরে রয়ে গেছে বড় এক রহস্য। ৩০ বছর ধরে এই রহস্য সমাধানের চেষ্টা চলছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত সমাধানে পৌঁছাতে পারেননি কেউ।
আশির দশকের শেষ দিকে সিআইএর সদর দপ্তরে একটি ভাস্কর্য নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয় জিম সানবর্ন নামের এক শিল্পীকে। বিশ্বের বিখ্যাত গোয়েন্দাদের মুখচ্ছবি যাতে প্রতিদিন সিআইএর সদস্যরা দেখতে পান, সে জন্য এ ভাস্কর্য নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। সানবর্ন একটি শিল্পকর্ম নির্মাণ করেন সেখানে, যাতে তিনি এক গোলোকধাঁধা সৃষ্টি করেন। তিনি গোয়েন্দাদের উদ্দেশে একটি ক্রিপ্টোগ্রাফিক চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।
ভাস্কর্যটির প্রস্থ প্রায় ২০ ফুট, উচ্চতা ১২ ফুট। কিন্তু এর গা জুড়ে রয়েছে অক্ষর আর অক্ষর। সাধারণ চোখে দেখলে এটিকে একটি অস্পষ্ট শিল্পকর্ম মনে হতে পারে। সানবর্ন বলেন, প্রায় দুই হাজার অক্ষর রয়েছে এই শিল্পকর্মে, যেগুলো সরু করাত দিয়ে কেটে বসিয়েছেন তিনি। আর সঙ্গে জুড়ে দিয়েছেন চারটি ধাঁধা। এই ধাঁধাগুলো মিলিয়ে ফেলতে পারলে পাওয়া যাবে গোপন একটি বার্তা। ১৯৯০ সালের ৩ নভেম্বর ক্রিপ্টোস নামের এই শিল্পকর্মটি উন্মুক্ত করা হয়। কিন্তু এখনো সব ধাঁধার সমাধান করা যায়নি।
সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, সানবর্নের ধারণা ছিল, কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই এই রহস্যের সমাধান হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘আমি কখনো ভাবিনি, ৩০ বছর পরও এই রহস্যের সমাধান করতে পারবে না কেউ।’
মজার ব্যাপার হলো সানবর্ন একজন শিল্পী। তিনি ক্রিপ্টোলজি বিশেষজ্ঞ নন। এমনকি তিনি অঙ্কেও ভালো ছিলেন না। এ জন্য তিনি ক্রিপ্টোলজি বিশেষজ্ঞ ও সিআইএয়ের ক্রিপ্টোগ্রাফিক সেন্টারের সাবেক প্রধান এডওয়ার্ড শাইডের শরণাপন্ন হন। সানবর্ন বলেন, ‘তিনি আমাকে আধুনিক কোডিং বিদ্যার ধারণা দেন।’
এই ক্রিপ্টোসের রহস্যকে সানবর্ন পেঁয়াজের খোসার সঙ্গে তুলনা করেছেন। চারটি ধাঁধার তিনটির সমাধান হয়েছে। শেষটি এখনো বাকি। সানবর্ন বলেন, আরও কিছু খোসা ছাড়াতে হবে। তবেই সেই গোপন বার্তা পাওয়া যাবে।