ওয়াশিংটনে জ্ঞানবাহনের মতবিনিময় সভা

সারা বিশ্বে পৌঁছে যাবে জ্ঞানবাহনের বাহক

জ্ঞানবাহনের মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস। ছবি: সংগৃহীত
জ্ঞানবাহনের মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস। ছবি: সংগৃহীত

ওয়াশিংটন ডিসির ভার্জিনিয়ায় ‘জ্ঞানবাহন’ শীর্ষক প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা নামে একটি মতবিনিময় সভা হয়েছে।
২৪ জুন সন্ধ্যায় ভার্জিনিয়ায় জ্ঞানবাহনের প্রতিষ্ঠাতা ড. বদরুল হুদা খানের নিজ বাসভবন খান বাগানে এই মতবিনিময় সভা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাসসহ কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা অনুষ্ঠানে ই-লার্নিং বিশেষজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদ ড. বদরুল হুদা খান ও জ্ঞানবাহনের এডুকেশনাল কো-অর্ডিনেটর আমেনা শাহিন উপস্থিত দর্শকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। প্রশ্ন-উত্তর শেষে সবাইকে নৈশভোজে আপ্যায়ন করা হয়।
জ্ঞানবাহন হচ্ছে সাধারণ বাহনের মতোই, তবে এই বাহনে যাতায়াত করতে করতে শেখাও যায়। এসব গাড়িতে যুক্ত আছে আধুনিক শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ। রয়েছে কম্পিউটার, প্রজেক্টর, ওয়েবক্যাম, সাউন্ড সিস্টেম। বাহনটির ভেতরে ঘরের কাঠামো দেওয়া হয়েছে। শেখানো হয় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, হাতের কাজ, সাধারণ আইনসহ জীবনঘনিষ্ঠ বিভিন্ন বিষয়। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে ন্যূনতম শিক্ষা পৌঁছে দেওয়ার এই পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন ড. বদরুল হুদা খান।

জ্ঞানবাহনের মতবিনিময় সভায় অতিথিরা। ছবি: সংগৃহীত

জ্ঞানবাহন নিয়ে মানুষের প্রশ্নের কৌতূহল মেটাতে আয়োজিত সভায় প্রশ্নের জবাব দেন জ্ঞানবাহনের প্রতিষ্ঠাতা বদরুল হুদা। তিনি জ্ঞানবাহন সম্পর্কে বলেন, জ্ঞানবাহনের একজন ড্রাইভার থাকবেন একজন শিক্ষিত ব্যক্তি। তিনি যেখানে যাবেন, মানুষের মধ্যে জ্ঞান বিতরণ করবেন।
বদরুল হুদা বলেন, জ্ঞানবাহনের ড্রাইভারকে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। তাঁদের অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হবে। তবে শিক্ষার পাশাপাশি চা-আড্ডার ব্যবস্থাও থাকবে জ্ঞানবাহনে।
বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ বলেন, জ্ঞানবাহনে গ্রামের মতো একটা পরিবেশ বিরাজ করবে। তবে তার ভেতরেই মানুষকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া হবে। জ্ঞানবাহনে সব ধরনের তথ্য থাকবে, সেখান থেকে শিখতে পারবে মানুষ। তিনি বলেন, ‘একটি টিভি চ্যানেলে সারা বিশ্বে প্রতিনিধি দেওয়া সম্ভব না। কিন্তু আমি আশাবাদী, বিশ্বের প্রতিটি কোনায় এই জ্ঞানবাহনের বাহক পৌঁছে যাবে।’

জ্ঞানবাহনের মতবিনিময় সভায় কমিউনিটির গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। ছবি: সংগৃহীত

অনুষ্ঠানে অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত হ্যারি কে টমাস বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ অনেক আন্তরিক। দেশটি আগের থেকে শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রে খুব দ্রুতই এগিয়ে যাচ্ছে। আমি বাংলাদেশকে কখনো ভুলতে পারব না।’ এ সময় তিনি ড. বদরুল হুদার জ্ঞানবাহনের উদ্যোগকে স্বাগত জানান।
জ্ঞানবাহনের প্রশংসা করে সৈয়দ মাহমুদুল হক বলেন, ‘জ্ঞানবাহন আমার কাছে মনে হয় সচেতনতার এক মেসেজ। এটা সামাজিক আন্দোলনও বটে। যেসব গ্রামে জ্ঞানবাহন যাচ্ছে, সেখানে পুঁথিগত বিদ্যার বাইরে মানুষকে শেখাতে হবে। জ্ঞানবাহন এগিয়ে যাক, সেই প্রত্যাশাই রইল।’
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক প্রধান প্রযোজক এ কে এম আসাদুজ্জামান, এনটিভির সিনিয়র নিউজ প্রেজেন্টার মুমতাহিনা রিতু ও ভয়েস অব আমেরিকায় কর্মরত সাবরিনা চৌধুরী ডোনা।
প্রশ্ন–উত্তর পর্বের ফাঁকে ফাঁকে গান গেয়ে অনুষ্ঠানকে বিনোদনময় করে রাখেন বদরুল হুদার স্ত্রী ড. সীমা খান।