মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের মতামত বিভাগের সম্পাদক পদত্যাগ করেছেন। বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলন দমনে সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব করে রিপাবলিকান সিনেটর টম কটনের লেখা 'সেন্ড ই দ্য ট্রুপস' প্রকাশের পর থেকেই তীব্র সমালোচনার মুখে ছিলেন নিউইয়র্ক টাইমসের মতামত সম্পাদক জেমস বেনেট। অবশেষে বিতর্কিত নিবন্ধ প্রকাশের ফলে বার্তাকক্ষে সৃষ্ট ক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে তাঁকে সরে যেতে হলো।
জেমস বেনেটের পদত্যাগের তথ্যটি এক বিবৃতির মাধ্যমে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমসের প্রকাশক এজি সুলজবার্গার। বিবৃতিতে একই সঙ্গে জানানো হয়, মতামত পাতার উপসম্পাদক জিম ডাও সরে যাচ্ছেন। তিনি অন্য একটি বিভাগের দায়িত্ব নেবেন। আর সম্পাদকীয় পৃষ্ঠার দায়িত্ব এখন থেকে উপসম্পাদক কেটি কিংসবারি পালন করবেন।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়, আরাকানসাস অঙ্গরাজ্যের রিপাবলিকান টম কটনের লেখা নিবন্ধের মূল বক্তব্য ছিল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সেনা মোতায়েনের প্রস্তাবের সমর্থনে। ট্রাম্পের এই বক্তব্য যদিও খোদ সেনাবাহিনী, পেন্টাগন ও সাবেক সেনা কর্মকর্তাদের তীব্য অস্বস্তিতে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু অনুরূপ বক্তব্য উপস্থাপন করে লেখা একটি নিবন্ধ যখন নিউইয়র্ক টাইমস প্রকাশ করে, তখন সবাই বিস্মিত হয়েছিল। শুরুতে পত্রিকাটির প্রকাশক সম্পাদকীয় বিভাগের এমন অবস্থানের পক্ষ নিলেও পরে তা বদল করে জানায়, 'এটি নিউইয়র্ক টাইমসের মানের সঙ্গে যায় না।'
বলার অপেক্ষা রাখে না যে, এই অবস্থান পরিবর্তনের পেছনে সবচেয়ে জোর ভূমিকা রেখেছে নিবন্ধটি প্রকাশের ফলে সৃষ্ট জনরোষ ও নিজেদের বার্তাকক্ষেই তৈরি হওয়া ক্ষোভ ও প্রতিবাদ। গত বুধবার টম কটনের লেখাটি প্রকঅশ পাওয়ার পরদিন বহু সাংবাদিক প্রতিবাদ হিসেবে কাজে যোগ দেননি। শুধু তাই নয় আট শতাধিক সাংবাদিক পরে নিবন্ধটি প্রকাশের নিন্দা জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে সই করেন। পরে ২০১৬ সাল থেকে মতামত সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জেমস বেনেট স্বীকার করেন যে, লেখাটি প্রকাশের আগে তিনি তা পাঠ করে দেখেননি।
নিউইয়র্ক টাইমসে এমন নিবন্ধ প্রকাশের পর টুইটারে দেওয়া পোস্টে পুলিৎজার পুৃরস্কারপ্রাপ্তসাংবাদিক নিকোল হান্নাহ লেখেন, 'একজন কৃষ্ণাঙ্গ নারী ও একজন সাংবাদিক হিসেবে আমি ভীষণভাবে লজ্জিত।'
উল্লেখ্য, গত ২৫ মে মিনিয়াপোলিসে এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্মকর্তার নির্যাতনে নিহত হন জর্জ ফ্লয়েড নামের এক কৃষ্ণাঙ্গ। এতে পুরো আমেরিকায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বেশ কিছু স্থানে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়, লুট, ভাংচুর ইত্যাদি চলে। এ অবস্থায় আন্দোলনকারীদের শান্ত করার বদলে ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের বলপ্রয়োগে বশে আনার কথা বলেন। এ জন্য এমনকি সেনা মোতায়েনের কথঅও তিনি বলেন, যার সরাসরি নিন্দা জানিয়ে বক্তব্য দেন তাঁরই সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী থেকে শুরু করে বেশ কয়েকজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। অন্য মহলগুলো থেকে সমালোচনা তো ছিলই। এই অবস্থায় নিউইয়র্ক টাইমসে এ ধরনের পদক্ষেপের সমর্থনে লেখা নিবন্ধ প্রকাশ পাওয়ায় সবাই স্তম্ভিত হয়ে