নিউইয়র্কের লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে ফারিন দৌলা
নিউইয়র্কের লেখক-সাংবাদিকদের সঙ্গে ফারিন দৌলা

শিশুদের সচেতন করে তুলতে হবে

বাংলাদেশে অনগ্রসর শিশুদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ওয়ান সার্কেল। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ফারিন দৌলা বলেছেন, বাংলাদেশের সমাজ এবং সাংস্কৃতিক কাঠামোতে শিশুদের ওপর নির্যাতন এবং পীড়নের নানা ঘটনা ঘটতে থাকে। এসব পীড়ন শুধু যে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর মধ্যেই ঘটে থাকে এমন নয়। ঘটে যাওয়া ঘটনা ধামাচাপা দিতে প্রকৃত সমস্যাকে আড়াল করে দেওয়া হয়। কখনো এমন হয় নানা ভীতি থেকে, কখনো হয়ে থাকে লোক লজ্জার ভয় থেকে।

২৬ আগস্ট নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা আয়োজিত এক লেখক-সাংবাদিক আলোচনা সভায় ফারিন দৌলা আরও বলেন, পরিবর্তিত সময়ের চ্যালেঞ্জকে মোকাবিলা করে শিশুদের সচেতন করে তুলতে হবে। এ লক্ষ্য অর্জনের জন্য নানা গৃহীত কর্মকৌশলের কথা তিনি তুলে ধরেন।

সাংবাদিক মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ আয়োজনের সঞ্চালনায় ছিলেন ইব্রাহীম চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন—মারিয়া মরিয়ম, ইশতিয়াক রূপু, সাব্রী সাবেরীন, শেলী জামান খান, মনজুরুল হক, রোকেয়া দীপা, জাহিদা আলম, আবদুস শহীদ, তোফাজ্জল লিটন, জাকির হোসেইন প্রমুখ।

ফারিন তাঁর শিশুতোষ গ্রন্থ ‘তারা এবং জয়’ নিউইয়র্কের লেখক-সাংবাদিকদের উপহার দেন। নিউইয়র্কের লেখক-সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ‘মহামারি করোনা: ডেটলাইন নিউইয়র্ক’ বইটি ফারিন দৌলার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে নিজের ও সংগঠনের কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে গিয়ে ফারিন দৌলা বলেন, চারপাশে অহরহ ঘটছে শিশু নির্যাতনের ঘটনা। ফারিন মনে করেন, শিশুর সামাজিকীকরণ ও তার মানবিকতা বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো ‘স্পর্শ’। কিন্তু কখনো কখনো এই স্পর্শজনিত অভিজ্ঞতাই শিশুর জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। খারাপ স্পর্শ শিশুর জীবনে বয়ে আনে নানারকম দুঃস্বপ্ন আর বিভীষিকা। যা তার ভবিষ্যৎ জীবনকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। অনেক মানসিক ঘাটতির মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠতে হয় সেই নিপীড়িত শিশুটিকে। শিশুকে ভালো স্পর্শ, খারাপ স্পর্শ বিষয়টির পার্থক্য বোঝালে শিশুরা নিজেরাও এই বিষয়ে সচেতন থাকবে। তাদের সঙ্গে খারাপ কিছু ঘটছে কিনা তারা সহজেই তা বুঝতে পারবে। স্পর্শকাতর বিষয়টি নিয়ে গল্প, ছবি আঁকা বা খেলার ছলে শিশুদের কীভাবে শেখানো যায় এখন সময় এসেছে এসব নিয়ে কথা বলার।

শিশুদের নিয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকদের এসব ব্যাপারে যৌথভাবে কাজ করা উচিত। শিশুর শারীরিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা, সুষম খাবার, পর্যাপ্ত ঘুম যেমন প্রয়োজন, তেমনি শিশুর ইতিবাচক মানসিক বিকাশের জন্যও প্রয়োজন সচেতনতা। মা-বাবা, পরিবার, চারপাশের মানুষের আচরণ ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ শিশুর মানসিক বিকাশে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে বলে আলোচনায় ফারিন দৌলা গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।