রাশিয়ার বাহিনীকে মোকাবিলায় ইউক্রেনের যুদ্ধবিমানের চেয়ে ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র বেশি দরকার। এমনটি মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। আর সে জন্যই মার্কিন ঘাঁটি ব্যবহার করে ইউক্রেনে মিগ যুদ্ধবিমান পাঠানোর প্রস্তাব নাকচ করে দেওয়া হয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর গতকাল বৃহস্পতিবার এ প্রস্তাব নাকচ করে। তাদের দাবি, ইউক্রেনের এখন মাটি ব্যবহার করার মতো অস্ত্র বেশি দরকার।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওয়াশিংটন এবং ন্যাটোর প্রতি বারবার আহ্বান করেছেন, হয় ইউক্রেনে যুদ্ধবিমান পাঠানো হোক অথবা তাদের আকাশসীমাকে ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণা করা হোক।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস ওয়াশিংটনে সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার ‘দুর্দান্ত’ বিমানবাহিনীকে পাল্টা আঘাত করতে ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য কার্যকর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা খুঁজে পেয়েছে ইউক্রেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের ইউক্রেনীয় মিত্রদের ভূমি থেকে নিক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখব। রাশিয়ান রকেট ও আর্টিলারি থেকে আসা গোলার হুমকি মোকাবিলায় এসব অস্ত্র তাদের দরকার।’
প্রাইস আরও বলেন, ইউক্রেনের নিজস্ব ‘সম্পূর্ণ মিশনে সক্ষম’ বিমানের ‘বেশ কয়েকটি স্কোয়াড্রন’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এসব সামরিক সরঞ্জাম আরও পাঠানো মানে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘিয়ে আগুন ঢেলে দেওয়া। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সংঘাত বন্ধে এবং সংঘাত যাতে আর না ছড়িয়ে যায়, সে জন্য আমরা যা করতে পারি এবং যা করা দরকার, তা করাটা আমাদের দায়িত্ব।’
ইউক্রেনের বিমানবাহিনীকে শক্তিশালী ও রুশ হামলার বিরুদ্ধে দেশটির প্রতিরক্ষাব্যবস্থা জোরদার করার জন্য পশ্চিমা নেতাদের কাছে যুদ্ধবিমান পাঠানোর অনুরোধ জানিয়ে আসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এ নিয়ে তাদের অনাগ্রহ ও পাশাপাশি আলোচনা চলার মধ্যেই মঙ্গলবার ওয়ারশর পক্ষ থেকে সোভিয়েত আমলের মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান দেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়।
পোল্যান্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী, মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানগুলো জার্মানির রামস্টেইনে মার্কিন বিমানঘাঁটিতে সরবরাহ করা হবে। এরপর সেগুলো পাঠানো হবে ইউক্রেনে।
পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মাতেউস মোরাউইকি বলেন, ‘আক্রমণাত্মক অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে যেকোনো সিদ্ধান্ত ন্যাটো সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে নিতে হবে। এ কারণেই আমরা আমাদের জেট ফাইটারের সব বহর রামস্টেইনকে দিতে রাজি। কিন্তু আমরা নিজে থেকে কোনো পদক্ষেপ নেব না। কারণ, আমরা এ যুদ্ধের কোনো পক্ষ নই।’
তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে চলমান যুদ্ধে ইউক্রেনের পক্ষে মার্কিন-ন্যাটো ঘাঁটি থেকে যুদ্ধবিমান উড়ে যাওয়ার প্রস্তাবটি পুরো ন্যাটো জোটের জন্যই প্রচণ্ড উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বুধবার পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মারিউস ব্লাসজ্যাককে বলেছেন, ওয়াশিংটনের এ পরিকল্পনায় জড়িত হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই।